ঈদের আগে ভোলার শতাধিক গ্রাম প্লাবিত

অতি জোয়ারের পানিতে ভোলা জেলার ছয়টি উপজেলার অন্তত শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামের অন্তত লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি মানুষের মাঝে ঈদ আনন্দ নেই। তাদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে।
সরেজমিন প্লাবিত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জোয়ার আসার সঙ্গে সঙ্গেই মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর পানি হু হু করে ঢুকে পড়ছে গ্রামগুলোতে। মুহূর্তের মধ্যেই ঘরবাড়ি রাস্তাঘাট সবই জোয়ারের পানিতে প্লাবিত। কোথাও আবার মাটির রাস্তা ধসে গিয়ে আরো ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
ভোলা সদর উপজেলার ইলিশা, রাজাপুর ভেদুরিয়া, ভেলুমিয়া, কাচিয়া ইউনিয়নের অন্তত ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। দৌলতখান উপজেলার মদনপুর, মেদুয়া, চর নেয়ামতপুর, ভবানীপুর ও সৈয়দপুর ইউনয়িনের ২৫টি গ্রাম, তজুমদ্দিন উপজেলার মলংচড়া, চাঁদপুর, সোনাপুর, শম্ভুপুর ইনিয়নের অন্তত ৩০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
এ ছাড়া লালমোহন উপজেলার লর্ডহার্ডিঞ্জ ও ধলিগৌর নগর ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রাম, চরফ্যাশন উপজেলার চর কুকরী-মুকরী, নজরুল নগর ও ঢালচর ইউনিয়নের ১৫টি গ্রাম এবং মনপুরা উপজেলার দক্ষিণ সাকুচিয়া, রামনেওয়াজ, মনপুরা ইউনিয়নের ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এসব গ্রামের অন্তত লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে।
তবে তজুমদ্দিন উপজেলা শহরের বাজার প্লাবিত হয়েছে। ডুবে আছে অনেক রাস্তাঘাট। শহরের প্রধান সড়ক জোয়ারের পানিতে প্লাবিত। যদিও ভাটার সময় কিছুটা পানি নেমে যাচ্ছে।
রোজা আর ঈদের আনন্দে ভাটা পড়েছে পানিবন্দি মানুষের মাঝে। গভীর নলকূপগুলো পানিতে ডুবে যাওয়ায় বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। একই সঙ্গে খাবারের। এ সব এলাকা পানিতে প্লাবিত থাকায় রান্না-বান্নার কাজ করতে পারছে না বলে জানান পানিবন্দি তজুমদ্দিন উপজেলার চাঁদপুর ইউনয়িনের মো. রফিক সাদী। তিনি আরো বলেন, ঈদের আনন্দ নেই তাদের মাঝে।
আগে রোয়ানুর প্রভাবে এলাকায় লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠার আগেই এই অবস্থা।
মনপুরা উপজেলার রামনেওয়াজ ইউনিয়নের কলাতলী চরের মো. মামুন মাস্টার জানান, তাদের চরের হাটবাজার গুলোতে এখন গলা সমান পানি। ঘর থেকে বের হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
চরফ্যাশন ঢালচরের ব্যবসায়ী মো. শাহ আলম ফরাজী বলেন, ঢালচর ইউনিয়নে বেড়িবাঁধ না থাকায় অতি জোয়ারের সময় পানিতে প্লাবিত হয় পুরো ইউনিয়ন। চরম দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে প্লাবিত গ্রামের মানুষের মাঝে।
একই কথা জানালেন চর কুকরী-মুকরী ইউনিয়নের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. বাদশা মিয়া। তিনি জানান, একদিকে প্লাবিত গ্রাম অপরদিকে বনায়নের বিষাক্ত সাপের উপদ্রপ। সব মিলিয়ে চরম আতঙ্কে দিন কাটছে তাঁদের।