চট্টগ্রামে নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘শহীদ হামজা ব্রিগেড’

চট্টগ্রামে ‘শহীদ হামজা ব্রিগেড’ নামের নতুন একটি জঙ্গি সংগঠনের সন্ধান পেয়েছে র্যাব। ওই সংগঠনের তিন সদস্য ও এক অস্ত্র ব্যবসায়ীকে আটক এবং বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি জব্দ করেছে।
আজ সোমবার দুপুরে পতেঙ্গায় র্যাবের সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব ৭-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহমেদ।
মিফতাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, গতকাল রোববার রাত ১০টা থেকে আজ সোমবার সকাল ১০টা পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে শহীদ হামজা ব্রিগেড জঙ্গি সংগঠনের তিন সদস্য ও এক অস্ত্র ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়। আটক জঙ্গিরা হলেন মাসুদ রানা, মো. কামাল উদ্দিন ও মো. আশরাফ আলী। আর অস্ত্র ব্যবসায়ীর নাম মোজাহের হোসেন মিয়া। মিয়ানমারের নির্যাতিত মুসলমানদের সহায়তার লক্ষ্যে শহীদ হামজা ব্রিগেড গঠন করা হয় বলে আটক ব্যক্তিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে গতকাল রাত থেকে চলা অভিযানের বর্ণনা দেন র্যাব-৭-এর অধিনায়ক। তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রোববার রাত ১০টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর স্টেশন রোড এলাকায় হোটেল মিডটাউনে অভিযান চালিয়ে অস্ত্র ব্যবসায়ী মোজাহের হোসেন মিয়াকে আটক করে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নগরীর একে খান রোডের শ্যামলী বাস কাউন্টার থেকে মো. কামাল উদ্দিন ও মো. আশরাফ আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। কামাল ও আশরাফ জানান, পাঁচলাইশ থানাধীন কসমোপলিটন আবাসিক এলাকার জাহানারা অ্যাপার্টমেন্টের সপ্তম তলায় মাসুদ রানার বাসায় অস্ত্রের ভাণ্ডার মজুদ আছে।
আটককৃতদের তথ্যের ভিত্তিতে আজ সোমবার সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত জাহানারা অ্যাপার্টমেন্টের বাসায় অভিযান চালায় র্যাব। এ সময় একটি স্টিলের আলমারি থেকে পাঁচটি একে-২২, পাঁচটি বিদেশি পিস্তল, একটি এফবিবিএল বন্দুক, একটি এলজি, একে ২২-এর ১০টি ম্যাগাজিন, একটি পিস্তলের ম্যাগাজিন, টুটু বোরের ২১৫টি গুলি, শটগানের ৫০১টি গুলি জব্দ করে র্যাব। এ ছাড়া ওই বাসা থেকে বিভিন্ন ধরনের অস্ত্রের ব্যবহার, গোয়েন্দা নজরদারি ও সমরকৌশল বিষয়ক কাগজপত্র, দলিল ও বিদেশি বই জব্দ করা হয়েছে।
র্যাব ৭-এর সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) সোহেল মাহমুদ জানান, নতুন জঙ্গি সংগঠন শহীদ হামজা ব্রিগেডের সামরিক গ্রুপের নাম এসএইচবি। এরা এদের এক-একজন সদস্যকে ‘ওয়ান ম্যান আর্মি’ হিসেবে গড়ে তুলতে চায়। জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, শারীরিক ও মানসিক কার্যক্রমের মাধ্যমে এদের তৈরি করতে চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় প্রশিক্ষণ চলছিল।
সোহেল মাহমুদ আরো জানান, এর আগেও এদের ‘জঙ্গি সামরিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের’ সন্ধান পেয়েছিল র্যাব। বাঁশখালীর লটকন পাহাড়ের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে উদ্ধার করা আলামত থেকে ধারণা করা হচ্ছে, সেখানে বিমান ছিনতাইয়ের কৌশল, গেরিলা যুদ্ধ, শারীরিক ও সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হতো। সেখানে কয়েকটি ফায়ারিং রেঞ্জ ও বাংকার তৈরি করা হয়েছিল। ওই অভিযানে বিপুল পরিমাণ বিদেশি অস্ত্র ও প্রশিক্ষণসামগ্রীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব-৭।
র্যাব ৭-এর অধিনায়ক মিফতাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, এর আগে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি হাটহাজারী থেকে ১২ জন, ২১ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম-বাঁশখালী মহাসড়কের আড়াই কিলোমিটার দূরে গভীর জঙ্গলে সাধনপুর লটকন পাহাড় এলাকা থেকে পাঁচজন ও ২৮ ফেব্রুয়ারি হালিশহর থানার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।