তিন বাউলকে কোপানোর ঘটনায় মামলা, খোঁজ নেই একজনের

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার একতারপুর বাউল আখড়ায় হামলা ও তিন বাউলকে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় মামলা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আর ঘটনার দুদিন পরেও খোঁজ মেলেনি বাউল নুরু বক্স শাহের।
এদিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা বাউল কল্যাণ সংস্থার সভাপতি মহিউদ্দিন শাহের নেতৃত্বে নয় সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল আজ সোমবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
জীবননগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাজ্জাদ হোসেন জানান, এ ঘটনায় শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে গতকাল রোববার রাতে জীবননগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। উপজেলার সেনেরহুদা গ্রামের জামাত আলীকে (৪০) এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা বাউল কল্যাণ সংস্থার সভাপতি মহিউদ্দিন শাহ জানান, আগামীকাল মঙ্গলবার জেলা কমিটির সভা থেকে কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। শনিবার রাতের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি বলেন, সমাজের সুযোগসন্ধানীরা এই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা চালিয়ে এলাকায় অশান্তি ছড়িয়ে দিতে চাইছে। এ জন্য তিনি প্রশাসনের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন এবং হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
আখড়াবাড়ির তত্ত্বাবধায়ক মুকুল শাহ জানান, কে বা কারা কী কারণে হামলা করেছে তা তিনি জানেন না। তবে নিখোঁজ নুরু বক্স শাহের সন্ধান মিললেই সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে।
একতারপুর গ্রামের বাউল শহিদুল হক শাহ জানান, গ্রামের শেষ মাথায় তাঁর ব্যক্তিগত ১২ কাঠা জমির ওপর আট বছর আগে আখড়া স্থাপন করা হয়। তাঁর ছেলে মুকুল শাহ আখড়াবাড়ির তদারকি করেন।
শনিবার রাতে দুজন সাধু তাঁদের স্ত্রীদের নিয়ে আখড়ায় আসেন। রাত ১২টার দিকে মুকুল সাধুদের জন্য কাথা-বালিশ নিতে বাড়িতে এলে দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে তিনজনকে জখম করে। এঁরা হলেন কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার শোরুদা গ্রামের বাউল আবদুর রহিম শাহ (৬৫) ও তাঁর স্ত্রী ভুলু বেগম (৫৫) এবং ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ভবানীপুরের রুশিয়া খাতুন (৪৫)।
এঁদের মধ্যে রুশিয়া খাতুনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। আহত অন্য দুজন সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আর রুশিয়ার স্বামী বাউল নুরু বক্স শাহ নিখোঁজ রয়েছেন।