‘এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতার আন্দোলন’

ক্ষমতাসীন দলের জনপ্রতিনিধি ও বহিরাগত নেতাকর্মীদের হাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্যসহ একাধিক শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে ও বিচারের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে প্রগতিশীল ছাত্রজোট।
আজ শনিবার বেলা ১১টায় এসব কর্মসূচি পালন করা হয়। কর্মসূচি শেষে বিক্ষোভ মিছিল হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়নের টেন্ট থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে এসে সমাবেশ করে।
সমাবেশে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী মামুন হায়দার বলেন, ‘২০১৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি সান্ধ্যকোর্সবিরোধী আন্দোলন ছিল বিশ্ববিদ্যালয়কে পুঁজির হাত থেকে রক্ষার আন্দোলন। আর এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতার আন্দোলন। শিক্ষক-শিক্ষার্থী না থাকলে বিশ্ববিদ্যালয় থাকবে না। আর বিশ্ববিদ্যালয় না থাকলে জাতি থাকবে না।’
বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি ফারুক ইমন বলেন, ‘ব্যক্তি হিসেবে শুধু উপাচার্যকে নয়, তাঁরা অপমান করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়কে। আর বিশ্ববিদ্যালয়ে এ রকম পরিস্থিতি একদিনে তৈরি হয়নি। এর বীজ বপন হয়েছে অনেক আগেই। তাই বিশ্ববিদ্যালয়কে এখনই সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে। তাহলে কোনো অপশক্তি এখানে স্থান পাবে না।’
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন সুজনের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন রাবি শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সভাপতি সোহরাব হোসেন, ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি আয়াতুল্লাহ খোমেনী, বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক দিলীপ রায় প্রমুখ। বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে সংহতি জানান গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী মামুন হায়দার, ইতিহাস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক গোলাম সারওয়ার, রাবি কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোট, সমাজতান্ত্রিক মহিলা পরিষদ।
এদিকে উপাচার্য ও শিক্ষকদের লাঞ্ছনার ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাধ্যক্ষ ও চেয়ারম্যান পরিষদ। আজ শনিবার দুপুরে প্রাধ্যক্ষ পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এস এম একরাম উল্লাহ এবং চেয়ারম্যান পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক হারুন অর রশীদ স্বাক্ষরিত পৃথক বিবৃতিতে উপাচার্যের দপ্তরে সংঘটিত ঘটনাকে দুঃখজনক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত বিধি-বিধানের ওপর অযাচিত হস্তক্ষেপ বলে উল্লেখ করা হয়। বিবৃতিতে উপাচার্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি যথাযথ সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে সবার প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
গত বৃহস্পতিবার উপাচার্য অধ্যাপক মুহম্মদ মিজান উদ্দিনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ ওঠে মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ডাবলু সরকারসহ একাধিক নেতার বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগ নেতার তালিকা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন নিয়োগ না করায় উপাচার্যকে এ লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়েছে বলে জানা গেছে। এর আগে গত বুধবার রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রাজশাহী-১ আসনের সাংসদ ওমর ফারুক চৌধুরী উপাচার্যকে হুমকি দিয়েছিলেন বলেও অভিযোগ পাওয়া গিয়েছিল। একদিনের ব্যবধানে এমন দুটি ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।