চট্টগ্রামে বিএএফ শাহীন কলেজে অতিরিক্ত বেতন বৃদ্ধি

চট্টগ্রামের বিএএফ শাহীন কলেজে শিক্ষার্থীদের অতিরিক্ত বেতন আদায়ের প্রতিবাদ জানিয়েছেন অভিভাবকরা। তাঁরা অতিরিক্ত বেতন আদায় বন্ধ এবং সরকারি নিয়মমতো শিক্ষার্থীদের বেতন নির্ধারণের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় তাঁরা আন্দোলন কর্মসূচির ঘোষণা দেবেন।
বিএএফ শাহীন কলেজের অভিভাবক ফোরাম আজ শনিবার চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এসব কথা জানিয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়েন অভিভাবক ফোরামের আহ্বায়ক শাখাওয়াত কামাল। তিনি বলেন, চলতি বছরের মে মাসে কলেজ কর্তৃপক্ষ হঠাৎ করে আবারও বেতন ও সেশন ফি বৃদ্ধি করে। এতে প্রায় তিন হাজার শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন বিঘ্নিত হয়ে পড়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, কলেজ কর্তৃপক্ষ শ্রেণি শিক্ষকদের মাধ্যমে ক্লাসে ক্লাসে জানিয়ে দেয় যে বাংলা মাধ্যমের বেতন ৯৮০ টাকা থেকে বাড়িয়ে এক হাজার ৫৮০ টাকা করা হয়েছে। বর্তমানে সেশন ফি দুই হাজার ২০০ টাকা থেকে পাঁচ হাজার টাকা করা হয়েছে। একইভাবে ইংরেজি মাধ্যমের বেতন এক হাজার ৩২০ টাকা থেকে দুই হাজার ১১৫ টাকা ও সেশন ফি দুই হাজার ৫০০ টাকা থেকে ছয় হাজার টাকা করা হয়েছে। এতে অধিকাংশ মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত অভিভাবকরা দিশেহারা হয়ে পড়েন। বেতন কমানোর জন্য অধ্যক্ষের কাছে গেলে তিনি অনেককেই চরমভাবে অপমান করেন। তিনি বলেন, বেতন দিতে না পারলে ছাত্রছাত্রীকে কলেজ থেকে নিয়ে যেতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এই কলেজে কোনো ছাত্রছাত্রী পূর্বানুমতি ছাড়া অনুপস্থিত থাকলে একদিনের জন্য ১০০ টাকা জরিমানা, মাসের ১৫ দিনের মধ্যে বেতন দিতে না পারলে পরবর্তী মাসে ১০০ টাকা জরিমানা এবং পরপর দুই মাস বেতন বকেয়া থাকলে পুরো এক মাসের বেতন জরিমানা দিতে হয়। বাংলাদেশের আর কোনো কলেজে এমন অন্যায়ভাবে টাকা আদায়ের নজির আছে কি না আমাদের জানা নেই। তা ছাড়া নানা অজুহাতে ছাত্রছাত্রীদের কাছে প্রতি মাসেই অন্যায়ভাবে টাকা আদায়ের ঘটনা ঘটে। আমাদের জানামতে, বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর উদ্যোগে কলেজের যাবতীয় ব্যয় নির্বাহ করা হয়। ফলে বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকারের সবার জন্য শিক্ষা কর্মসূচি ও স্কুল কলেজে ন্যূনতম বেতন নির্ধারণের যে অঙ্গীকার, শাহীন কলেজের বেতন ও সেশন ফির নামে অবৈধ টাকা আদায় তার পরিপন্থী। এখানে উল্লেখ করতে চাই যে বিএএফ শাহীন কলেজ সরকারি এমপিওভুক্ত একটি প্রতিষ্ঠান।’
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে বারবার অনুরোধ করলেও অভিভাবকদের অপমান ও লাঞ্ছনা ছাড়া অধ্যক্ষের কাছ থেকে কিছুই মেলেনি। গত ১৪ জুলাই জেলা প্রশাসক কলেজের অধ্যক্ষকে অবৈধ সেশন ফি আদায় ও অতিরিক্ত বেতন বাড়ানোর বিষয়ে কারণ দর্শানোর পত্র দিলেও এ ব্যাপারে অধ্যক্ষ ও কলেজ কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। বরং অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের নানাভাবে অপমানিত করে কলেজ ছেড়ে চলে যেতে বলছে। এমতাবস্থায় আমরা প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, বিমানবাহিনীর প্রধান, জেলা প্রশাসক, কলেজ কর্তৃপক্ষসহ সবার কাছে আমাদের সন্তানদের ন্যায্য বেতনে পড়ার অধিকার নিশ্চিত করার বিনীত অনুরোধ জানাই।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন এস এম বাবুল হাসনাত, কাজল কান্তি লোধ, হুমায়ুন কবির, শফিউল আলম, মজিদুল আলম, সেকান্দর আজম, মো. সেলিমসহ শতাধিক অভিভাবক।