সাবেক সাংসদ সাখাওয়াতের মৃত্যদণ্ডাদেশে কেশবপুরে উল্লাস, মিষ্টি বিতরণ

একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় যশোর-৬ (কেশবপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সাখাওয়াত হোসেনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়ায় উল্লাস প্রকাশ করেছেন তাঁর নিজ এলাকার মানুষ।
আজ বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রায় ঘোষণার পর সাখাওয়াতের নিজ গ্রাম কেশবপুরের হিজলডাঙ্গাসহ উপজেলার বিভিন্ন স্থানে আনন্দ প্রকাশ করেন মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের জনতা। সেই সঙ্গে মিষ্টি বিতরণ করে মুক্তিযোদ্ধা সংসদসহ বিভিন্ন সংগঠন। এ সময় অবিলম্বে রায় কার্যকর এবং উপজেলার অন্য যুদ্ধাপরাধীর বিচারের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানান স্থানীয়রা।
উপজেলার চিংড়া গ্রামের শহীদ চাঁদতুল্য গাজীর ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা গাজীউর রহমান বলেন, যুদ্ধকালীন সময়ে কুখ্যাত রাজাকার সাখাওয়াত হোসেনের নেতৃত্বে রাজাকাররা তাঁর বাবা ও ভাই আতিয়ারকে হত্যা করেছিল। আজ এত বছর পর হলেও সঠিক বিচার পেয়ে তিনি ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা খুশি। তিনি অবিলম্বে এ রায় কার্যকরের দাবি জানান।
স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আনিছুর রহমান খান বলেন, যুদ্ধাপরাধী সাখাওয়াতের ফাঁসির রায় হওয়ায় মুক্তিযোদ্ধাসহ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সবাই আনন্দিত ও উল্লসিত। এর মাধ্যমে এই অঞ্চলের প্রথম কোনো যুদ্ধাপরাধীর ফাঁসির রায় দেওয়া হলো। যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে তাদের আত্মীয়স্বজনরা সারা দেশে জঙ্গিতৎপরতা চালাচ্ছে অভিযোগ করে এসব জঙ্গিদেরও মানবতাবিরোধী অপরাধের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানান তিনি।
কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এস এম রুহুল আমীন বলেন, এ রায়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কলুষমুক্ত হলো এবং সেই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসীদের জয় হলো।
রায়ের প্রতিক্রিয়ায় কেশবপুরের নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আবু বকর সিদ্দিকী বলেন, এ রায়ের মধ্য দিয়ে কেশবপুরের নাগরিক সমাজের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। একজন কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধীর মৃত্যুদণ্ডে দেশবাসীর সঙ্গে কেশবপুরের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মানুষও ঋণমুক্ত হলো। শোকাবহ আগস্ট মাসে এ রায় মাইলফলক বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
এ রায়ের ফলে বাঙালি জাতি শহীদদের ঋণ কিছুটা হলেও পরিশোধ করতে পারল বলে মনে করেন কেশবপুরের প্রবীণ সাংবাদিক আজিজুর রহমান। জাতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে এবং জঙ্গিমুক্ত দেশ গড়তে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি কার্যকর করতে হবে এবং বাহাত্তরের সংবিধানে ফিরে যেতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এ সময় কেশবপুরের সব যুদ্ধাপরাধীকে বিচারের আওতায় নিয়ে আসার দাবি জানান স্থানীয় গণজাগরণ মঞ্চের নেতা মফিজুর রহমান নান্নু।