মেহেরপুরে দুই সাব-রেজিস্ট্রার কারাগারে

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে দুই সাব-রেজিস্ট্রারকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন মেহেরপুরের একটি আদালত।
এঁরা হলেন ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার শাহিদুর রহমান এবং নড়াইল সদর উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার আব্দুর রশিদ মণ্ডল। তাঁরা দুজনই এর আগে মেহেরপুর সদর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
আজ রোববার সকালে দুদক কুষ্টিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ে আব্দুর রশিদ মণ্ডল ও শাহিদুর রহমান হাজিরা দিতে আসেন। এ সময় তাঁদের আটক করা হয়। পরে দুপুরে দুদকের কুষ্টিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপপরিচালক আব্দুল গাফফার বাদী হয়ে মেহেরপুর সদর থানায় একটি মামলা করেন। সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁদের পুলিশে হস্তান্তর করেন।
বিকেল ৫টায় পুলিশ দুজনকে মেহেরপুর মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করেন। অপরপক্ষে আসামিদের পক্ষে জামিনের আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে বিচারক মো. মহিরুজ্জামান জামিন নামঞ্জুর করে তাঁদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আসামিপক্ষের মিয়াজান আলী ও আবদুল্লাহ আল মামুন রাসেল গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান।
মামলার এজাহারে দুদকের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, মেহেরপুর সদর উপজেলার বিভিন্ন মৌজার সরকারি খাস জমি ১৮ জন ভূমিহীনের নামে বন্দোবস্ত করার জন্য দলিলের নিবন্ধন কাজে জালিয়াতি করা হয়েছে। ওই দলিলগুলো হস্তলিপি বিশারদ দিয়ে দাতার স্বাক্ষর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার প্রয়োজন হয়। দলিলগুলো মেহেরপুর সদর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রারের কার্যালয়ে রক্ষিত আছে। এই কবুলিয়ত দলিলগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য বার বার সাব-রেজিস্ট্রারদের চিঠি দেওয়া হয়। কিন্তু দুই সাব-রেজিস্ট্রার দলিল জালিয়াতির সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের বাঁচানোর জন্য চেষ্টা করেন। তাঁরা দলিলগুলো সরবরাহ না করে তদন্তে বাধা দেন। এটা দুদক আইন অনুযায়ী অপরাধ।
এ ব্যাপারে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। গত ১৬ আগস্ট অভিযোগটি তদন্ত করার জন্য দুদক কুষ্টিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপপরিচালক আব্দুল গাফফারকে তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ করা হয়।
আইজবীবীরা জানান, আজ এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই দুই সাব-রেজিস্ট্রার দুদকের কুষ্টিয়া কার্যালয়ে যান। সেখানেই তাদের আটক করে আদালতে দুদকের পক্ষ থেকে মামলা করা হয় এবং সেই মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
মামলাটি বিচারাধীন থাকায় দুই সাব-রেজিস্ট্রার যাতে মামলায় প্রভাব বিস্তার এবং তদন্ত কাজে বিঘ্ন না ঘটাতে না পারেন সেই কারণে দুদক তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আবেদন করে বলে জানান দুই আইনজীবী।