একদিনের বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে খুলনার বহু এলাকা

ভারি বর্ষণে তলিয়ে গেছে খুলনা নগরীর বহু এলাকা। গতকাল রোববার দিনভর বৃষ্টির কারণে আজ সোমবারও পানিবন্দি হয়ে আছেন কয়েক হাজার মানুষ।
প্রচণ্ড বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে খানাজাহান আলী ও আড়ংঘাটা থানা এলাকায় অবস্থিত খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট), শিক্ষক প্রশিক্ষণ মহাবিদ্যালয়, উচ্চ মাধ্যমিক প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট, গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুল, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, খুলনা মহিলা করিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ বেশির ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠিান ও রাস্তাঘাট, মাছের ঘের, পুকুর ও ফসলি জমি।
এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ কয়েকটি এলাকার কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বন্ধ হয়ে গেছে কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম।
খুলনা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক আমিরুল আজম জানান, গতকাল রোববার সকাল ৬টা থেকে বিকাল ৬টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টায় মোট ২১৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা গত ২০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ।
প্রবল বৃষ্টির পর নগরীর গুরুত্বপুর্ণ সড়কগুলোর পানি সরে গেলেও খানজাহান আলী থানা, কুয়েট ক্যাম্পাসের আবাসিক ভবন, শিক্ষক প্রশিক্ষণ মহাবিদ্যালয়ের পুরা ক্যাম্পাস, এইচএসটিটিআই, গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরী স্কুল, কারিগারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, প্রতিভা প্রি-ক্যাডেট স্কুল, তেলীগাতি স্কুল, টিটিকলেজ পুরাতন রোড, মধ্যেরডাঙ্গা মুল সড়ক, মধ্যেরডাঙ্গা আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, খানাবাড়ী বালিকা ও প্রাইমারী স্কুর, কার্তিককুল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, শহীদ জিয়া মহাবিদ্যালয়, সেনপাড়া জহিরউদ্দিন স্বপন বিদ্যাপিঠ, আল হেরা প্রি-ক্যাডেট, শিরোমনি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) কার্যালয়, আরআরএফ স্কুল এখনো পানিবন্দি হয়ে আছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষে পানি ঢুকে পড়ায় বন্ধ রয়েছে শিক্ষা কার্যক্রম।
খানজাহান আলী ও আড়ংঘাটা থানা এলাকার সেনপাড়া, তেলিগাতী, শিরোমনি, বিলপাবলা, মধ্যডাঙ্গা, কার্তিককুল, শিরোমনি বিলডাকাতিয়া, রংপুর এলকার মাছের ঘের, পুকুরের মাছ ও জমির ফসল ভেসে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে স্থানীয় কৃষক ও মাছচাষিরা।
পানিবন্দি এলাকাগুলো ঘুরে দেখা গেছে, কুয়েট ক্যাম্পাসের ১৫, ১৬, ১৭ ও ১৮ নম্বর ভবনের চারদিকে দুই থেকে পাঁচ ফুট পর্যন্ত পানিতে ডুবে রয়েছে। ভবনগুলোর নিচতলায় পানি ঢুকে ভবনের বসবাসকারী কর্মচারীদের বাসার আসবাপত্র পানিতে তলিয়ে রয়েছে।
পাশের শিক্ষক প্রশিক্ষণ মহাবিদ্যালয়টির ক্যাম্পাসজুড়ে শুধু পানি আর পানি। রাস্তার ওপর দুই থেকে চার ফুট পর্যন্ত পানি রয়েছে। মূল একাডেমিক ভবনের নিচতালা পানিতে তলিয়ে গেছে। আবাসিক ভবন এবং শিক্ষার্থীদের হোস্টেলগুলোর নিচতলাও রয়েছে পানির নিচে। এইচএসটিটিআই এর ভবন ও হোস্টেলে পানিতে তলিয়ে রয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানে কেউ প্রবেশই করতে পারছে না।
এ ছাড়া গভর্নমেন্ট ল্যাবরেটরি স্কুলের ফটক দিয়ে পানি ঢুকে মূল ভবনের নিচতালায় পানি উঠে শ্রেণি কক্ষগুলোতে পানি ঢুকে যাওয়ায় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করা হবে।
এদিকে পুরাতন টিটি কলেজ সড়কটি কোমর সমান পানির নিচে তলিয়ে আছে। খানজাহান আলী থানার সামনে হাটু পানি, বিল ডাকাতিয়ার তেলিগাতি, শিরোমনি, বিলপাবলা শিরোমনি বিলডাকাতিয়া পানিতে একাকার সব দিকে শুধুই পানি আর পানি।
যোগীপোল, যাব্দিপুর, সেনপাড়া, সোনালী, কেবল শিল্প এলাকা, শিরোমনি মধ্যপাড়া, দক্ষিণ পাড়া, দামোদর, আলকা, বরণপাড়া, মশিয়ালী, পাড়িয়াডাঙ্গা, মাত্তমডাঙ্গা, শিরোমনি বিলডাকাতিয়া গ্রামের বেশির ভাগ মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে। এসব এলাকার রাস্তাঘাট, পুকুর, কৃষিজমি সব পানিতে তলিয়ে গেছে।