প্রাণের শ্রমিককে গণধর্ষণ, ৬ জনের মৃত্যুদণ্ড

নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় দিন-দুপুরে অন্তঃসত্ত্বা এক নারী শ্রমিককে গণধর্ষণ ও পর্নগ্রাফির দায়ে ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ধর্ষণের ভিডিওচিত্র ধারণ করায় পর্নগ্রাফি আইনে ছয় আসামিকে সাত বছরের কারাদণ্ডাদেশ ও আরো দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার বেলা ৩টার দিকে নরসিংদীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক শামীম আহাম্মেদ এই রায় দেন।
নির্যাতিত নারী ঘোড়াশালে প্রাণ আরএফএল কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন।
মৃত্যুদণ্ডাদেশ পাওয়া আসামিরা হলেন আশিকুর রহমান (২২), ইলিয়াছ ওরফে সফিকুল (২৩), রুমিন মিয়া (২০), ইব্রাহিম (২২), রবিন আহম্মেদ (২০) ও আবদুর রহমান (২৪)। তাঁদের সবার বাড়ি পলাশ উপজেলার বাগপাড়ায়।
আদালত-সংশ্লিষ্ট ও মামলা সূত্রে জানা যায়, প্রাণ আরএফএল কোম্পানিতে কর্মরত এক নারী শ্রমিক (২০) ২০১৩ সালের ২৩ মে বেলা আড়াইটায় কর্মস্থল থেকে কোম্পানির নিজস্ব মেস পলাশ উপজেলার বাগপাড়ায় মুক্তা ভিলায় যাচ্ছিলেন। তিনি ঘোড়াশাল পৌরসভার জনতা জুটমিলের গেটের সামনে পৌঁছালে দণ্ডাদেশ পাওয়া আসামিরা তাঁর গতি রোধ করে। পরে তাঁকে ধরে নির্জন স্থানে নিয়ে গণধর্ষণ করে এবং ধর্ষণের চিত্র মুঠোফোনে ভিডিও ধারণ করে। পরে তা ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়।
ঘটনার একদিন পর নির্যাতিত নারী শ্রমিক বিষয়টি প্রাণ আরএফএল কোম্পানির সহকারী ব্যবস্থাপক এ এস এম সাদেকুল ইসলামকে জানান। পরে তিনি বাদী হয়ে পলাশ থানায় আসামিদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের অভিযোগ এনে মামলা করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পলাশ থানার তৎকালীন পরিদর্শক (তদন্ত) বদরুল আলম খান (বর্তমান ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) জানান, আসামিদের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ৮ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। একই সঙ্গে ধর্ষণের ভিডিও জমা দেওয়া হয়। মামলায় ১২ স্বাক্ষীর সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে সন্দেহাতীতভাবে দোষী প্রমাণিত হওয়ায় আদালতের বিচারক আসামিদের বিরুদ্ধে এ রায় দেন।
রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট রিনা দেবনাথ, সাবেক স্পেশাল পিপি শরীফুল ইসলাম দর্পণ, এপিপি অ্যাডভোকেট এম এন অলিউল্লাহ, সাবেক এপিপি অ্যাডভোকেট কানিজ ফাতেমা। আসামিপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অ্যাডভোকেট এম এ আওয়াল, এ কে এম মনিরুজ্জামান ও অ্যাডভোকেট মাহমুদুল হক মিঠু।