অতিরিক্ত বরাদ্দ পেয়েও চুক্তি করেননি নওগাঁর মিলাররা

সরকারিভাবে চাল সংগ্রহ কার্যক্রমের দ্বিতীয় ধাপে অতিরিক্ত সময় ও বরাদ্দ পেয়েও সরবরাহের চুক্তি করেননি নওগাঁর মিল-মালিকরা। মিল-মালিক নেতারা বলছেন, বাজারে ধান-চলের দরের সঙ্গে অসামঞ্জস্য থাকায় তাঁরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
অন্যদিকে, প্রথম ধাপের চাল সংগ্রহ কার্যক্রমেও নেমে এসেছে স্থবিরতা। নতুন করে আবারও সময় বাড়ানোর পাশাপাশি বাজার দরের সঙ্গে মিল রেখে দর বেঁধে দেওয়ার দাবিতে খাদ্য মন্ত্রণালয়ে লিখিত আবেদন করেছেন নওগাঁর মিল-মালিকরা।
জানা গেছে, চলতি বোরো মৌসুমে নওগাঁর মিলারদের কাছ থেকে প্রথম দফায় ৩২ টাকা কেজিদরে ২০ হাজার ৯৩২ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে সরকার। সেই অনুযায়ী ৪ আগস্ট নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই জেলার এক হাজার ২০০ মিল-মালিকের সঙ্গে চাল সরবরাহের চুক্তি হয়। ৫ আগস্ট থেকে শুরু হয় গুদামে চাল সরবরাহ কার্যক্রম। চলবে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত।
কিন্তু এই কর্মসূচির শুরু থেকেই বেঁধে দেওয়া সময় ও বরাদ্দ নিয়ে মিল মালিকরা অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছিলেন। অতিরিক্ত বরাদ্দের সঙ্গে নতুন করে আরো সময় বৃদ্ধির জন্য খাদ্য মন্ত্রণালয়ে আবেদনও করেন তাঁরা।
নওগাঁর সহকারী খাদ্য নিয়ন্ত্রক মোহাজের হোসেন জানান, মিলারদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সারা দেশ থেকে আগের দরেই আরো আড়াই লাখ টন চাল কেনার অতিরিক্ত বরাদ্দ দেয় মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে আরো ১৫ দিন মেয়াদ বৃদ্ধি করে সরবরাহের শেষ সময় বেঁধে দেওয়া হয় ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এই বরাদ্দে নওগাঁ থেকে ১৪ হাজার ৪১ মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্য ঠিক করা হয়। এ জন্য মিলারদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের চুক্তি করার শেষ দিন ছিল ২৪ আগস্ট। কিন্তু নির্ধারিত শেষ দিনেও নওগাঁর কোনো মিলার চুক্তি করেননি।
এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা চালকল মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ হোসেন চকদার বলেন, চাল সংগ্রহ কার্যক্রমের শুরুর দিকে স্থানীয় বাজারে ধান-চালের বাজার দরের সঙ্গে সরকারিভাবে বেঁধে দেওয়া দরের কিছুটা মিল থাকলেও এখন আর তা নেই। ধানের দুষ্প্রাপ্যতার কারণে সরকারি গুগামে চাল দিতে গেলে বড় ধরনের লোকসানে পড়তে হবে। তাই নতুন করে চুক্তি করা সম্ভব নয়।
সভাপতি আরো জানান, নতুন বরাদ্দটির দর বর্তমান বাজার দরের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নির্ধারণের পাশাপাশি আরো অন্তত দুই মাস বেশি সময় নির্ধারণের জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে।
এদিকে প্রথম ধাপের চাল সংগ্রহ কার্যক্রমেও অনেকটা স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। ৫ আগস্ট থেকে শুরু হয়ে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত মাত্র ১০ হাজার টন চাল সরবরাহ করতে পেরেছেন মিলাররা। সময় বৃদ্ধি করা না হলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।