শরীয়তপুরে পদ্মা নদীর ভাঙন, কান্না আর আহাজারি

শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার কুন্ডেরচর ইউনিয়নে পদ্মার ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। প্রতিদিনই ভাঙছে নতুন এলাকা। পদ্মার পারে চলছে মানুষের কান্না আর আহাজারি। অব্যাহত ভাঙনে দিশেহারা হয়ে আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছে তারা। জায়গা না পেয়ে খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়েছে অনেকেই।
শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয়রা জানায়, গত কয়েক দিনে পদ্মার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রবল স্রোতে পদ্মা নদীতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত ৬ আগস্ট কুন্ডেরচর ইউনিয়নে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়। গত ২৫ দিনের ভাঙনে ইউনিয়নটির চারটি গ্রামের ৮০০ পরিবারের বসতবাড়ি নদীতে গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ভাঙন হুমকিতে রয়েছে হাসেম আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইসমাইল মেমোরিয়াল উচ্চবিদ্যালয়, একটি পাকা মসজিদ, সরকারি পাকা সড়কসহ পাঁচ শতাধিক বসতবাড়ি।পদ্মার ভাঙন প্রতিদিনই তীব্র আকার ধারণ করছে।
গতকাল সোমবার সুরেশ্বর পয়েন্টে পদ্মার পানি ১০ সেন্টিমিটার বেড়েছে। তবে এখনো পদ্মার পানি বিপৎসীমার ৬০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
আজ মঙ্গলবার সকালে ভাঙনকবলিত এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ভাঙন আতংকে ঘর ও স্থাপনা সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। অনেকেই জায়গা না পেয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। চোখের সামনে বাপ-দাদার ভিটেবাড়ি পদ্মায় বিলীন হয়ে যেতে দেখে অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়ছে।
কলমিরচর গ্রামের ফারজানা বেগম (৩৫) কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমাদের সব কিছু পদ্মায় নিয়ে গেছে। শিশু সন্তান নিয়ে এখন কোথায় আশ্রয় নেব? তিন দিন ধরে এ স্কুলের মাঠে খোলা আকাশের নিচে পড়ে আছি। আমাদের তো সব কিছু গেছে। সরকারের কাছে আমাদের দাবি ভাঙন রোধে যেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’
জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল কাদের বলেন, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার তহবিল থেকে ৬৭৫টি পরিবারের মধ্যে ৩০ কেজি করে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। নতুন নতুন ভাঙনকবলিত এলাকার তালিকা তৈরা করা হচ্ছে।
এদিকে, ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে অপরাগতা প্রকাশ করে শরীয়তপুরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. তারেক হাসান বলেন, অস্থায়ী কোনো ব্যবস্থা নিয়ে ভাঙন রোধ করা যাবে না। স্থায়ী ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রকল্প তৈরি করে চাহিদাপত্র পাঠানো হবে।