২৭ লাখ টাকার কৃষিযন্ত্র মিলছে ৬ লাখ টাকায়

ক্ষেত থেকে ধান কাটা, মাড়াই, ঝাড়াই ও বস্তাবন্দি করার মেশিন ‘ব্রি- কম্বাইন্ড হারভেস্টার’ কর্মদক্ষতা বিষয়ক এক মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের ভুলটিয়া মাঠে এই মাঠ দিবস ও আনুষ্ঠানিক ধান কাটা হয়।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চুয়াডাঙ্গার সহযোগিতায় বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিআরআরআই) ফার্ম মেশিনারি অ্যান্ড পোস্ট হারভেস্ট টেকনোলজি বিভাগ এই মাঠ দিবসের আয়োজন করে।
ফার্ম মেশিনারি অ্যান্ড পোস্ট হারভেস্ট টেকনোলজি বিভাগের প্রধান ও মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আবদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বিআরআরআইয়ের মহাপরিচালক ড. ভাগ্য রানী বণিক। বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রতিষ্ঠানের পরিচালক (প্রশাসন ও সাধারণ পরিচর্যা) ড. শাহজাহান কবীর, ফলিত ও গবেষণা বিভাগের প্রধান ড. সফিকুল ইসলাম মমিন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ নির্মল কুমার দে। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তালহা জুবায়ের মাসরুর, বিআরআরআইয়ের কম্বাইন্ড হারভেস্টার মেশিনের স্থানীয় প্রস্তুতকারক সদর উপজেলার সরোজগঞ্জ বাজারের জনতা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. ওলিউল্লাহ ও বিআরআরআইয়ের জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা বিধান চন্দ্র নাথ।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ড. ভাগ্য রানী বণিক বলেন, কোরিয়া থেকে আমদানি করা কম্বাইন্ড হারভেস্টারের দাম ২৭ লাখ টাকা। অথচ বিআরআরআইয়ের সহযোগিতায় জনতা ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের তৈরি একই মানের ব্রি-কম্বাইন্ড হারভেস্টারের দাম ছয় লাখ টাকা। দেশীয় কাঁচামাল ও স্থানীয় প্রযুক্তিতে এই যন্ত্র তৈরি। তাই এর খুচরা যন্ত্রাংশ সব সময় পাওয়া যাবে। কৃষকরা কয়েকজন মিলে এই যন্ত্র কিনলে খুবই লাভবান হবে।
ভাগ্য রানী বণিক আরো বলেন, এই সরকার কৃষিবান্ধব সরকার। এটা কৃষকদের জন্য অত্যন্ত সাশ্রয়ী। জরুরি ভিত্তিতে ধান কাটা যাবে।
ড. শাহজাহান কবীরের দাবি, এক বিঘা জমির ধান শ্রমিক দিয়ে কাটতে দুই হাজার থেকে আড়াই হাজার টাকা খরচ হয়। সেখানে এই যন্ত্র দিয়ে কাটলে কম সময়ে মাত্র ৫০০ থেকে ৬০০ টাকায় কাটা সম্ভব।
ড. সফিকুল ইসলাম মমিনের ভাষ্যমতে, এলাকায় যত মেশিন আসবে ততই প্রতিযোগিতা হবে। কৃষকরা আরো কম মূল্যে এর সেবা পাবে।
নির্মল কুমার দে বলেন, ধান কাটার জন্য এটা খুবই ফলপ্রসূ। আমাদের দেশীয় বিজ্ঞানীদের প্রচেষ্টায় কম মূল্যে এই মেশিন পাওয়া যাচ্ছে। আমরা এই যন্ত্রের মাধমে যদি ধান কাটি তাহলে খুবই লাভজনক হবে।
মো. ওলিউল্লাহ বলেন, ‘ড. আব্দুর রহমান ও বিধান চন্দ্র নাথের সহযোগিতায় আমরা এই মেশিন তৈরি করেছি। এগুলো সংরক্ষণ , রক্ষণাবেক্ষণ করা যাবে খুব সহজে। খুব সহজেই প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ হাতের কাছে পাওয়া যাবে। এটা খুবই ভালো উদ্যোগ।’
কৃষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এই প্রযুক্তির কারণে তুলনামূলক কম খরচে দ্রুততম সময়ে ধান কাটা যাচ্ছে।
চালক রানা হাওলাদার বলেন, ভালো অপারেটর যদি এই মেশিন চালান তাহলে জ্বালানি খরচ কম হবে। মাত্র আড়াই লিটার জ্বালানিতে এক ঘণ্টা মেশিন চালানো যাবে। পুরোপুরি শুকনো হলে দ্রুত কাজ হবে এবং কাদাপানির জমি হলে সময় কিছুটা বেশি লাগবে।