আজিমপুরে মৃত ‘জঙ্গির’ রাজশাহীর বাড়ি পাচ্ছে না পুলিশ

ঢাকার আজিমপুরে মৃত ‘জঙ্গির’ প্রকৃত নাম শমসেদ হোসেন। করিম ছিল তাঁর ছদ্মনাম। তাঁর গ্রামের বাড়ি রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানাধীন মেহেরচণ্ডি এলাকায়। বাবার নাম মোসলেহ উদ্দিন।
পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) এ তথ্য দিয়ে বলেছে, শমসেদ হোসেনের সাংগঠনিক নাম আবদুল করিম। জাতীয় পরিচয়পত্রে তাঁর ঠিকানার জায়গায় লেখা রয়েছে : ৬৩০ নম্বর সিটি করপোরেশন, বোয়ালিয়া, রাজশাহী।
ঢাকার পুলিশ এ দাবি করলেও রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া থানার মেহেরচণ্ডি এলাকায় খোঁজ নিয়ে পুলিশ এখন পর্যন্ত তাঁর কোনো খোঁজ পায়নি। পুলিশ তাঁর বাড়ি ও স্বজনদের খোঁজ শুরু করেছে। কিন্তু কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না।
রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র সিনিয়র সহকারী কমিশনার (এসি) ইফতে খায়ের আলম বলেন, শমসেদ হোসেনের বাড়ি রাজশাহীতে এমন তথ্য তাঁদের কাছে আসার পর অনুসন্ধান শুরু হয়েছে। কিন্তু এর কোনো সত্যতা পাওয়া যাচ্ছে না। আজ রোববার সকাল থেকে মেহেরচণ্ডি ও আশপাশের এলাকায় অনুসন্ধানে নেমেছে পুলিশ। কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত শমসেদের বাড়ি বা তাঁর স্বজনদের কারো সন্ধান পায়নি পুলিশ।
এসি ইফতে খায়ের আলম বলেন, বিভ্রান্ত করার জন্য জঙ্গিরা সব সময় ছদ্মনাম ও ঠিকানা ব্যবহার করে থাকে। তার ক্ষেত্রেও এমনটিই ঘটে থাকতে পারে। এরপরও বিভিন্ন সোর্স থেকে পুলিশ এ ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করছে। কোনো তথ্য পাওয়া গেলে অবশ্যই তা গণমাধ্যমে জানানো হবে।
আজ মেহেরচণ্ডি এলাকায় গিয়ে শমসেদের কোনো ঠিকানা পাওয়া যায়নি। ওই এলাকায় একই নামে আরো দুজন ব্যক্তি থাকেন। তাঁদের একজন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চা বিক্রেতা ও অপরজন দর্জি। তাঁরা এলাকাতেই আছেন।
শনিবার রাতে ঢাকার আজিমপুরে পুলিশের অভিযানের সময় শমসেদের মৃত্যু হয়। তখন পুলিশ তাঁর নাম করিম বলে জানিয়েছিল। রোববার সকালে প্রকৃত পরিচয় পাওয়ার কথা জানায় পুলিশ। পুলিশের দাবি, নিহত ব্যক্তি গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারি রেস্তোরাঁয় হামলাকারীদের সহায়তাকারী। এই ব্যক্তিই করিম নামে বসুন্ধরায় জঙ্গিদের জন্য ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিলেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি রাজশাহীতে বলে তথ্য এলে তোড়জোড় শুরু হয় রাজশাহী মহানগর পুলিশের মধ্যে।
এদিকে শমসেদের ময়নাতদন্তে শেষে আজ বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক সোহেল মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, ‘শমসেদের গলার ডানপাশে এবং ডান হাতে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তিনি আত্মহত্যা করেছেন।’
ভিসেরা প্রতিবেদন তৈরির জন্য শমসেদের মাথার চুল, থাই মাসল ও রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানান চিকিৎসক।
গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার পর রাজধানীর আজিমপুরে বিডিআর ২ নম্বর গেটের পাশে ২০৯//৫৯ পিলখানা রোডের বাড়িতে সন্দেহভাজন জঙ্গিদের আস্তানায় অভিযান চালান পুলিশ সদস্যরা। এ সময় শমসেদ হোসেন নিহত হন। আহত হন সন্দেহভাজন তিন নারী জঙ্গি। সন্ত্রাসীদের হামলায় পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হন।