পঞ্চগড়ে চামড়া বেচাকেনা নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতার ক্ষোভ

পঞ্চগড় জেলায় এবার চামড়ার দাম খুব কম গেছে। ট্যানারি মালিকদের নির্ধারণ করে দেওয়া দামের চেয়ে বেশি দাম দিয়ে কোনো পাইকারি ক্রেতা চামড়া না কেনায় এ অবস্থা হয়েছে বলে মনে করছেন খুচরা বিক্রেতারা।
তবে পঞ্চগড় শহরের চামড়া ব্যবসায়ী আতাউর রহমান আতা, হাসিবুল ইসলাম ও উসমান গনি আজ বুধবার জানান, দাম কম হলেও প্রচুর চামড়া আমদানি হয়েছে। কিন্তু চামড়া সংরক্ষণের লবণের দাম বেড়ে গেছে। নাটোর, ঢাকাসহ সব জায়গায় চামড়ার দামও কমে গেছে। বেশি দামে কিনে চামড়া বিক্রি করে লাভ করতে পারবেন কি না এ নিয়ে শঙ্কায় আছেন তাঁরা। এ জন্য কম দামে চামড়া কিনে মজুদ করেছেন ব্যবসায়ীরা।
পঞ্চগড় জেলায় এ বছর প্রায় ৩০ হাজার গরু কোরবানি হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাট-বাজারগুলোতে চামড়ার দাম কমে গেছে। পাইকারি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা সাহস পাচ্ছেন না বেশি দামে চামড়া কেনার। ফলে অত্যন্ত কম দামে চামড়া বিক্রি করতে হচ্ছে কোরবানিদাতাদের।
হাট-বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, সবচেয়ে ভালো গরুর চামড়া বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ এক হাজার টাকায়। সাধারণ মানের গরুর চামড়ার দাম ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা। বলদ বা গাভীর চামড়ার দাম নেই বললেই চলে। সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে এসব চামড়া। আর ছাগলের চামড়া বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা থেকে ৫০ টাকা দরে।
সদর উপজেলার জালাসী এলাকার আবদুল মজিদ জানান, বাসায় কেউ চামড়া কিনতে আসেনি। চামড়া বাজারে নিয়ে এসে দেখি দাম খুবই কম। বাধ্য হয়ে সাড়ে ৬০০ টাকায় বিক্রি করেছি। গত বছর গরু-ছাগলের চামড়ার ভালোই মূল্য ছিল। গত বছর নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে চামড়া বিক্রি হয়েছিল। কিন্তু এবার ক্ষুদ্র পাইকারি ব্যবসায়ীরা নির্ধারিত দামের চেয়েও কমে চামড়া কিনছেন।
একই উপজেলার তুলারডাঙ্গা এলাকার আবু বকর সিদ্দিক জানান, গতবারের তুলনায় এবার চামড়ার দাম একেবারেই কম। ভালো গরুর চামড়া বিক্রি করেছি সাড়ে ৭০০ টাকায়। গত বছর এমন চামড়া বিক্রি করেছি দেড় হাজার টাকারও বেশি দামে।
অনেক সময় বড় ব্যবসায়ীরা ক্ষুদ্র পাইকারদের দিয়ে চামড়া কেনেন। এ জন্য ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের হাতে টাকা থাকে। এবার বড় ব্যবসায়ীরা চামড়া কেনার টাকা দেননি। এটাও বাজার পড়ে যাওয়ার একটা কারণ।
পঞ্চগড়ের চামড়া চলে যায় সৈয়দপুর, নাটোর অথবা ঢাকায়। তবে চামড়ার ভালো দাম না পেলে ভারতে পাচার হওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।