নড়িয়ায় ২১ মাসের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার সুরেশ্বর সবুজবাগ এলাকায় ২১ মাস বয়সী একটি মেয়েশিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
গত রোববার দুপুর ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
গতকাল সোমবার বিকেলে শিশুটিকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
মায়ের দাবি, সুরেশ্বর সবুজবাগ গ্রামের জাকের আলী বেপারী (১৮) তাঁর মেয়েকে ধর্ষণ করেছে। গ্রামের মাতবররা ঘটনাটি মীমাংসার আশ্বাস দেওয়ায় জাকেরের বিরুদ্ধে কোনো মামলা করা হয়নি।
স্থানীয় ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, মেয়েশিশুটিকে ঘরে রেখে মা বাইরে কাজ করছিলেন। শিশুটি ঘরের মধ্যে একা খেলাধুলা করছিল। ওই সময় প্রতিবেশী জাকের আলী বেপারী দুপুর ২টার দিকে ওই ঘরে ঢুকে দরজা-জানালা বন্ধ করে দেয়। একটু পরে শিশুটির কান্নার শব্দ পেয়ে মা ঘরের দিকে ছুটে গেলে দরজা খুলে জাকের বেপারী পালিয়ে যায়।
এর পর মা শিশুটিকে কোলে নিতেই রক্তে শরীর ভিজে যায়। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় শিশুটিকে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান মা। চিকিৎসক তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। তবে আর্থিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় শিশুটিকে ঢাকায় নিয়ে যেতে পারেনি পরিবারটি।
সোমবার বিকেল ৪টার দিকে শিশুটিকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যান তার মা। এর পর থেকে শিশুটি ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঘটনার শিকার ওই শিশুটির মা বলেন, স্থানীয় মাতবর সামছুদ্দিন দেওয়ান ও মান্নান লস্কর বিষয়টি মীমাংসা করে দেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। তাই মামলা করা হয়নি।
এ বিষয়ে কথা বলতে এ প্রতিবেদক জাকের আলী বেপারীর বাড়িতে যান। তবে সেখানে কাউকে পাওয়া যায়নি।
ঘটনার পর থেকে জাকের আলী বেপারীকে এলাকায় দেখা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কিছু লোক।
গ্রামের মাতবর সামছুদ্দিন দেওয়ানের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
অন্য মাতবর মান্নান লস্কর বলেন, ‘এ ঘটনা মীমাংসার ব্যাপারে আমার সাথে কারো কথা হয়নি। তবে সামছুদ্দিন দেওয়ান বিষয়টি নিয়ে মীমাংসা করে দেবে বলে আমি শুনেছি।’
শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের চিকিৎসক রাজীব শংকর কর্মকার বলেন, সোমবার বিকেলে শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার মা। দেখে মনে হয়েছে, শিশুটি যৌন হয়রানির শিকার। তার চিকিৎসা চলছে।
নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকরাম আলী মিয়া বলেন, ‘একটি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এমন একটি খবর আমরা শুনেছি। শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে আমাদের একজন পরিদর্শক পাঠানো হয়েছে। তবে এখনো আমাদের কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ আসেনি।’
‘আমরা ধর্ষকের অবস্থান নির্ণয় করার চেষ্টা করছি। লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’