গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সোলায়মান মিয়ার বিরুদ্ধে স্ত্রী নুশরাত জাহান টুম্পাকে (৩০) হত্যার অভিযোগ উঠেছে।

গত রোববার রাতের কোনো একসময়ে এ হত্যা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

টুম্পা কোনাবাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. নজরুল ইসলামের মেয়ে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গাজীপুরের কাশিমপুরের ভবানীপুর এলাকার হাজি নুরুল ইসলামের ছেলে সোলায়মান মিয়ার সঙ্গে ১২ বছর আগে টুম্পার বিয়ে হয়। রাজধানীর উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টরের ৪ নম্বর রোডের ৪ নম্বর বাসায় স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে কয়েক বছর ধরে বসবাস করে আসছিলেন সোলায়মান।

টুম্পার বাবা নজরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, বিয়ের পাঁচ বছর পর থেকে বিভিন্ন সময় টুম্পাকে নির্যাতন করত সোলায়মান। সোলায়মানের মাদকের নেশা ও নারী-সংক্রান্ত ঘটনা নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত রোববার বিকেলে ছেলে নাফিকে (৮) উত্তরায় শ্বশুরের বাসায় রেখে স্ত্রী টুম্পা, টুম্পার ভাই সাঈদ ও টুম্পার ভাবীকে নিয়ে রাজধানীর বসুন্ধরা এলাকায় বেড়াতে যান সোলায়মান। সেখান থেকে যমুনা ফিউচার পার্কে যাওয়ার সময় গাড়িতে সোলায়মান মিয়ার মোবাইলে অন্য একটি মেয়ের ছবি দেখতে পান টুম্পা। এ নিয়ে স্বামীর সঙ্গে তাঁর কথাকাটাকাটি হয়। এর পর রাতে সোলায়মান ও টুম্পা তাঁদের বাসায় ফেরেন।

পরদিন সোমবার সকালে গৃহপরিচারিকা বাসায় এসে দরজা বন্ধ দেখতে পেয়ে টুম্পার মায়ের মুঠোফোনে কল করেন। খবর পেয়ে টুম্পার পরিবারের লোকজন ওই বাসায় এসে জানালা ভেঙে ঘরে প্রবেশ করে খাটের ওপর টুম্পাকে পড়ে থাকতে দেখেন। পরে তাঁকে উদ্ধার করে উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক টুম্পাকে মৃত ঘোষণা করেন।

গতকাল সন্ধ্যায় উত্তরা থানা পুলিশ টুম্পার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

নিহত টুম্পার শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে স্বজনরা দাবি করেছেন। তাঁদের ধারণা, রাতে কোনো একসময় টুম্পাকে নির্যাতন করে হত্যার পর সোলায়মান বাসার বাইরে থেকে দরজায় তালা লাগিয়ে পালিয়ে যান।

ঢাকার উত্তরা পশ্চিম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহেদ পারভেজ জানান, নিহতের শরীরের বিভিন্ন স্থানে কালচে দাগ রয়েছে। ঘটনাটি হত্যা কি না, তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া গেলে জানা যাবে। ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী সোলায়মান পলাতক।

এ ব্যাপারে জানতে যোগাযোগ করা হলে কাউন্সিলর সোলায়মান মিয়ার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।