কৃষিভিত্তিক শিল্প প্রসারে গুরুত্ব দিচ্ছে সরকার : শিল্পমন্ত্রী

কৃষিনির্ভর বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যে সরকার কৃষিভিত্তিক শিল্প প্রসারের ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু।
রাজধানীর ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই) মিলনায়তনে আজ শনিবার বিকেলে ‘জাতীয় শিল্পনীতি-২০১৬ : বাংলাদেশে শিল্পায়ন ও বিনিয়োগের সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে শিল্পমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘সরকার দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে ব্যবসা ও বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নয়নে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শিল্পনীতির আলোকে শিল্পনীতি ২০১৬ ঘোষণা করেছে। প্রয়োজনে এ নীতিমালায় সংশোধন ও বিয়োজনের সুযোগ রাখা হয়েছে। এরই মধ্যে ওষুধ, চামড়া, হালকা প্রকৌশল, ইলেকট্রনিক, প্লাস্টিক, কেমিক্যালসহ উদীয়মান শিল্প খাতগুলোর উন্নয়নে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
আমির হোসেন আমু বলেন, ‘বাংলাদেশ কৃষিনির্ভর দেশ হওয়ায় শিল্পনীতিতে কৃষি ও কৃষিভিত্তিক শিল্পকে অগ্রাধিকার প্রদান করা হয়েছে।’ তৈরি পোশাক খাতের পাশাপাশি অন্যান্য খাতে বিনিয়োগে এগিয়ে আসার জন্য শিল্প উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
আমির হোসেন আমু বলেন, ‘বাংলাদেশে উৎপাদিত ওষুধ পৃথিবীর ১২৩টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে। তবে এ শিল্পের ব্যবহৃত কাঁচামালের ৭৫ শতাংশ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। তাই ওষুধশিল্পে ব্যবহৃত কাঁচামাল বাংলাদেশে উৎপাদনের জন্য মনোযোগী হওয়া দরকার।’ এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সাভারের চামড়ানগরীতে ৬০টির মতো ট্যানারিকে স্থানান্তর করা সম্ভব হবে বলেও জানান তিনি।
ডিসিসিআইর ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হুমায়ুন রশিদ বলেন, জাতীয় শিল্পনীতি ২০১৬-এর লক্ষ্য হলো জাতীয় অর্থনীতিতে শিল্প খাতের অবদান ৩৫ শতাংশতে উন্নীত করা। শিল্পনীতি প্রণয়ন সরকারের একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ। দেশে বিদ্যমান করনীতি, মুদ্রানীতি এবং অন্যান্য আমদানি-রপ্তানি নীতিমালার সঙ্গে ঘোষিত শিল্পনীতির আরো বেশি সমন্বয় থাকা প্রয়োজন। নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও গ্যাসের অপ্রতুলতার সমস্যা সমাধানে আহ্বান জানান তিনি।
সেমিনারে অন্য বক্তারা বলেন, শিল্পনীতিতে উচ্চ অগ্রাধিকার ও অগ্রাধিকার খাত চিহ্নিত করায় দেশে শিল্পায়নে গতি আসবে। শিল্পনীতির যথাযথ বাস্তবায়নের জন্য একে একটি আইনি কাঠামোতে রূপ দেওয়া দরকার। একই সঙ্গে জ্ঞানভিত্তিক শিল্পের প্রসারে শিল্পনীতির আলোকে একটি গবেষণা ও উন্নয়ন সেল গঠনের তাগিদ দেন তাঁরা।
বক্তারা জাতীয় শিল্পনীতি, ২০১৬-এর আলোকে পরিবেশবান্ধব জ্বালানি উৎপাদন, শ্রমিক নিরাপত্তা জোরদারে শতভাগ শিল্প কারখানাকে বিমার আওতাভুক্তকরণ এবং এসএমই উদ্যোক্তাদের সক্ষমতা বাড়াতে স্বল্পমূল্যে জমি, জ্বালানি ও ঋণ প্রদানের ব্যবস্থা করতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন। বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটির নির্বাহী সদস্য নাভাস চন্দ্র মণ্ডল, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মনোজ কুমার রায়, শিল্প মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ইয়াসমিন সুলতানা, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন গবেষক ড. আশিকুর রহমান আলোচনায় অংশ নেন।