শতাধিক রোহিঙ্গা ভোটার তালিকা থেকে বাদ যাচ্ছেন

ভোটার তালিকা থেকে ৯৮ রোহিঙ্গার নাম বাদ দেওয়ার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটার নিবন্ধন অনুবিভাগে এবং আরো ৩২ জনের পূর্বপুরুষ রোহিঙ্গা প্রমাণিত হওয়ায় তাদের নাগরিকত্ব বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়ে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কশিমন (ইসি)।
আজ মঙ্গলবার ইসি সচিবালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মাহফুজা আক্তার স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত চিঠি জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটার নিবন্ধন অনুবিভাগ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
২০১৪ সালের ২৩ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে রোহিঙ্গা সন্দেহে ৩৯১ জনের একটি তালিকা ইসিতে পাঠানো হয়। এতে বান্দরবানের ৪৯ জন, কক্সবাজার সদরের ৪২ জন, উখিয়ার ছয়জন, মহেশখালীর ১১০ জন, কতুবদিয়ার দুজন, টেকনাফের ৭২ জন, চকরিয়ার ৫৫ জন ও রামুর ৯৯ জন রোহিঙ্গা রয়েছেন। রোহিঙ্গাদের ভোটার ও নাগরিকত্ব দেওয়ার অভিযোগে কক্সবাজারের সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদিসহ ৪৬ জন ও বান্দরবান জেলার পাঁচজনসহ মোট ৫১ জনপ্রতিনিধি ও নির্বাচন কমিশনের একজন উপজেলা কর্মকর্তার একটি তালিকাও পাঠানো হয়। তালিকা পাঠানোর সাথে সাথে দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়াসহ বেশ কিছু সুপারিশও করা হয়।
পরবর্তী সময়ে অধিকতর তদন্ত করতে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেনকে নির্দেশ দেয় ইসি। কিন্তু মো. আলী হোসেন তদন্ত করে সেখানে ৯৮ জন রোহিঙ্গাকে শনাক্ত করলেও সহায়তাকারীদের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মো. আলী হোসেন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘জেলা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সহায়তায় তদন্তের মাধ্যমে ৯৮ জন রোহিঙ্গাকে শনাক্ত করে ইসিতে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। তবে সংসদ সদস্য ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ততার বিষয়টি আমার জানা নেই।’
ইসিতে কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের পাঠানো তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, ৩৯১ জনের মধ্যে ১৮৪ জনকে বাংলাদেশি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ৯৮ জনকে রোহিঙ্গা হিসেবে চিহ্নিত করে ভোটার তালিকা থেকে তাঁদের নাম বাদ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে। পাশাপাশি তালিকার ৭৪ জনের নাম শনাক্ত করা যায়নি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ছাড়া তদন্ত প্রতিবেদনে প্রমাণিত হয়েছে ৩২ জনের পূর্বপুরুষ রোহিঙ্গা ছিলেন। যাঁদের পূর্বপুরুষ রোহিঙ্গা তাদের নাগরিকত্বে বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হয়েছে। আর চারজনের বিষয়ে কোনো মতামত না পাওয়ায় বিষয়টি জানতে চেয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসককে চিঠি দিয়েছে ইসি। এ ছাড়া এখনো বান্দরবান জেলার ৪৯ জন রোহিঙ্গার বিষয়ে কোনো প্রতিবেদন পাওয়া যায়নি।
এর আগে ২০১২ সালে গোয়েন্দা সংস্থা থেকে নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়, বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের ভোটার তালিকায় বাংলাদেশে অবস্থানরত বিশাল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
২০০৯ সালে ১২টি উপজেলার ভোটার তালিকা থেকে রোহিঙ্গা ও ভুয়া সন্দেহে ৪৮ হাজার ৬৭৩ জন ভোটারের নাম বাদ দেয় ইসি।