টাঙ্গাইলে নিহত জঙ্গি আহসানের লাশ নওগাঁর রানীনগরে দাফন

টাঙ্গাইলের কাগমারা শহরের মির্জামাঠ এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে নিহত আহসান হাবিবের (২৫) বাড়ি নওগাঁর রানীনগর উপজেলা সদরের দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামে। তিন বছর ধরে সে পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রেখে আত্মগোপনে জীবনযাপন করত।
গতকাল বুধবার সন্ধ্যার পর আহসান হাবিবের লাশ ঢাকা থেকে নওগাঁর রানীনগর উপজেলার দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামে নেওয়া হয়। রাত পৌনে ৮টার দিকে পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়।
বুধবার বিকেলে নওগাঁর রানীনগর উপজেলার দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামে গিয়ে সরেজমিনে আহসান হাবিব সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য পাওয়া গেছে।
রানীনগর উপজেলার দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আলতাফ হোসেন নিহত জঙ্গি আহসান হাবিবের বাবা। তিনি বলেন, ‘আমার দুই সন্তানের মধ্যে আহসান ছোট। ২০০৭ সালে নওগাঁ কেডি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে আহসান এসএসসি পাস করে। ২০০৯ সালে নওগাঁ সরকারি কলেজ থেকে সে এইচএসসি পাস করে। ছাত্র হিসেবে আহসান ছিল মেধাবী। পরে সে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হয়। ২০১৩ সালে সম্মান তৃতীয় বর্ষের ছাত্র থাকা অবস্থায় অস্ত্রসহ রাজশাহী শহরের জিরো পয়েন্টে র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হয় আহসান। তিন মাস পর আহসানকে জামিনে মুক্ত করা হয়। এর পর থেকেই নিরুদ্দেশ ছিল সে।’
আলতাফ হোসেন আরো বলেন, ‘অস্ত্র মামলায় জামিন করানোর পর থেকে আমাদের সঙ্গে গত তিন বছর কোনো যোগাযোগ ছিল না আহসানের। এ ব্যাপারে আমি রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলাম।’
গত মঙ্গলবার আলতাফ হোসেন র্যাব সূত্রের মাধ্যমে জানতে পারেন, টাঙ্গাইলের কাগমারা শহরের মির্জামাঠ এলাকায় শনিবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে আহসান হাবিবসহ কয়েক জঙ্গি নিহত হয়।
রানীনগর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শরীফ হোসেন বলেন, ‘আমার বড় ভাই মুক্তিযোদ্ধা আলতাফ হোসেন নওগাঁ কোর্টের মহুরি। আমার ভাতিজা আহসান হাবিব খুব মেধাবী ছাত্র ছিল। আমরা কখনো জানতে পারিনি যে আহসান নিষিদ্ধ এই জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছে। তবে তিন বছর ধরে পরিবারের কারো সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক বা যোগাযোগ ছিল না।
রানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, নিহত আহসান হাবিবের লাশ তার পরিবার আজ সন্ধ্যার পর ঢাকা থেকে নিয়ে আসে। রাত পৌনে ৮টার দিকে পারিবারিক কবরস্থানে লাশ দাফন করা হয়েছে। জানাজা এবং দাফনে পরিবার ও গ্রামের ৫০-৬০ জন উপস্থিত ছিলেন।