বিজিএমইএ ভবন ভাঙার পূর্ণ রায় প্রকাশ

ঢাকার হাতিরঝিল প্রকল্প এলাকায় গড়ে ওঠা তৈরি পোশাক ব্যবসায়ীদের সংগঠন বিজিএমইএ ভবন ভাঙার বিষয়ে আপিল বিভাগের পূর্ণ রায় প্রকাশিত হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার বিচারপতির স্বাক্ষরের পর ৩৫ পৃষ্ঠার এই রায় প্রকাশ করা হলো। বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার।
এ বিষয়ে হাইকোর্টের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার (প্রশাসন ও বিচার) সাব্বির ফয়েজ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, চার বিচারপতির স্বাক্ষরের পর রায়টি প্রকাশিত হয়েছে।
গত ২ জুন আপিল বিভাগ বাংলাদেশ তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) খারিজ করে দিয়ে হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন।
হাইকোর্ট ৯০ দিনের মধ্যে এই ভবন ভেঙে গুঁড়িয়ে দিতে বলেছিলেন। রায়ে আদালত বলেন, হাতিরঝিল প্রকল্পের সৌন্দর্যকে বিনষ্ট করতে অবৈধভাবে এই ভবন নির্মাণ করা হয়েছে।
এর আগে ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে জারি করা রুলের শুনানি শেষে বিজিএমইএ ভবন ৯০ দিনের মধ্যে ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়ে রায় ঘোষণা করেন। রায়ে বিজিএমইএকে নিজস্ব অর্থায়নে ভবনটি ভাঙতে বলা হয়। ভবনটি নির্মাণের আগে ওই স্থানের ভূমি যে অবস্থায় ছিল, সে অবস্থায় ফিরিয়ে আনতেও নির্দেশ দেওয়া হয়।
একই বছরের ৫ এপ্রিল বিজিএমইএর আবেদনে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন। পরবর্তী সময়ে আপিল বিভাগ স্থগিতাদেশের মেয়াদ আরো বাড়ান।
এর দুই বছর পর ২০১৩ সালের ১৯ মার্চ হাইকোর্টের ৬৯ পৃষ্ঠার পূর্ণ রায় প্রকাশিত হয়। ২০১৩ সালের ২৩ মে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয়। এ আপিলের শুনানি শেষে রায় ঘোষণা করা হয়। আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বহাল রাখেন।
রায়ে আদালত বলেন, ভবনটির হাতিরঝিল প্রকল্পে একটি ক্যানসারের মতো। এই ধ্বংসাত্মক ভবন অচিরেই বিনষ্ট করা না হলে এটা শুধু হাতিরঝিল নয়, গোটা ঢাকা শহরকে সংক্রমিত করবে।
রায়ে ভবনটি ৯০ দিনের মধ্যে ভেঙে ফেলার জন্য সরকার ও অন্যান্য কর্তৃপক্ষের ওপর নির্দেশ দেওয়া হয়। রায়ে বলা হয়, ওই জমি জনকল্যাণে ব্যবহার করতে হবে। হাতিরঝিল প্রকল্প একটি জনকল্যাণমূলক প্রকল্প।
রায়ে আদালত বলেন, বিজিএমইএ যাদের কাছে ওই ভবনের ফ্ল্যাটের অংশ বিক্রি করেছে, তাদের টাকা ফেরত দিতে হবে। দাবি করার এক বছরের মধ্যে টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলা হয় রায়ে। এর কারণ হিসেবে বলা হয়, বিজিএমইএ ভবনের সঙ্গে তাদের চুক্তি ছিল বেআইনি।