ইতালির বাজারে সাতক্ষীরার টালি
সাতক্ষীরার কলারোয়ার মাটির তৈরি নকশা করা টালি ইতালির বাজার দখল করেছে। টালি রপ্তানি করে কলারোয়ার উদ্যোক্তারা বার্ষিক ৭০ কোটি টাকার বেশি বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, টেকসই-দর্শনীয় হওয়ায় সাতক্ষীরার মাটির তৈরি টালির কদর দেশে-বিদেশে বাড়ছে। এতে উদ্যোক্তারা তাদের ব্যবসার পরিসর যেমন বাড়াচ্ছে, তেমনি কর্মসংস্থান বাড়ছে। স্থানীয় অনেক যুবক টালি কারখানাগুলোয় কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে।
কয়েকজন উদ্যোক্তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০০০ সালে ভ্রমণে এসে কলারোয়ার টালি দেখে মুগ্ধ হন ইতালির ব্যবসায়ী রাফেলি। টালি রপ্তানির পথ দেখান তিনিই। এর পর থেকেই ইতালিতে টালি রপ্তানি শুরু হয়।
কলারোয়ার দীপা টালি কারখানার মালিক বাদল চন্দ্র পাল বলেন, ‘২০০০ সালে আমাদের এখানে আসেন এক বিদেশি। বিদেশের জন্য টালি বানিয়ে দেওয়া যাবে কি না, তা তিনি জানতে চান। আমি বলি বানানো যাবে। তখন আমাদের কাছ থেকে টালি নিয়ে তারা বিদেশে পাঠালেন। তখন থেকে টালি ইতালিতে পাঠাই। এতে এখানকার লোক উপকৃত হচ্ছে। কারণ এখানে যেসব লোক বেকার ছিল তার অনেকেই এখানে কাজ করে।’
কলারোয়া উপজেলার মুরারিকাঠি গ্রামের পালপাড়ার একটি টালি কারখানার শ্রমিকরা জানায়, যে যেমন কাজ করে, সে তেমন টাকাই পায়। এক হাজার টালিতে ২০০ থেকে ৩০০ টাকা পাওয়া যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কলারোয়ায় প্রায় অর্ধশত টালি কারখানা রয়েছে। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এসব কারখানায় ১০ হাজারের বেশি শ্রমিক কাজ করে।
কলারোয়া টালি মালিক সমিতির সভাপতি গোষ্ঠ পাল বলেন, ‘প্রতি বছর সাড়ে ৩০০ কনটেইনার টালি বিদেশে যায়। এখান থেকে প্রতি বছর অর্জিত হয় ৭০ কোটি টাকার বেশি বৈদেশিক মুদ্রা।’
সাতক্ষীরায় বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প করপোরেশনের (বিসিক) উপব্যবস্থাপক ফারুকী নাজনীন বলেন, ‘এটা আমাদের জন্য বিরাট সৌভাগ্যের ব্যাপার যে আমাদের টালি ইতালিতে যাচ্ছে। ইতালিতে আবাসন নির্মাণে আমাদের টালি ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রায় এক দশক ধরে ইউরোপিয়ান বেল্ট ইতালির বাজার দখল করে রেখেছে।’