ফটিকছড়িতে ২০ দিন পর গৃহকর্মীর লাশ উত্তোলন

চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির বাগানবাজারে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের গৃহকর্মী শিরিন আকতারের লাশ ২০ দিন পর উত্তোলন করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টায় ইউপির রসুলপুর গ্রামের জুলফু মিয়া বাড়ির পেছনে টিলার ঢালুতে দেওয়া কবর থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়।
শিরিনের লাশ উত্তোলনে ফটিকছড়ির সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী হাকিম মোহাম্মদ নাজিমুল হায়দার নেতৃত্ব দেন। ময়নাতদন্তের জন্য তাঁর লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে মোহাম্মদ নাজিমুল হায়দার বলেন, ‘আদালতের আদেশে জেলা হাকিম আমাকে নিহত শিরিনের লাশ উত্তোলনকালে ও সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির সময় উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেন এবং তারই পরিপ্রেক্ষিতে আমার উপস্থিতিতে যাবতীয় কার্য সম্পন্ন হয়।’
এ ব্যাপারে প্রশ্নোত্তরে ভুজপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল লতিফ বলেন, ‘শিরিন আকতার নামে এক মেয়ে নিহত হয়েছেন মর্মে আদালতে তাঁর এক আত্মীয় অভিযোগ করেন এবং তারই ভিত্তিতে আদালত অভিযোগটি মামলা হিসেবে গণ্য করার নির্দেশ দিলে আমরা তা বাস্তবায়ন করি। আদালত ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন ও সত্যতা নিশ্চিতকরণে নিহত শিরিনের লাশ উত্তোলন, সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি এবং ময়নাতদন্তের নির্দেশ দিলে আমরা নির্বাহী হাকিমের উপস্থিতিতে তা সম্পন্ন করেছি। ময়নাতদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আসামিদের গ্রেপ্তার করে আইনের কাছে সোপর্দ করা হবে।’
সম্প্রতি জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও বাগানবাজার ইউপির চেয়ারম্যান রুস্তম আলীর বিরুদ্ধে গৃহকর্মী শিরিন আকতারকে হত্যা ও পরবর্তীতে তাঁর লাশ গুমের অভিযোগ ওঠে। শিরিনের বাবা বাদী হয়ে গত ৩ নভেম্বর চট্টগ্রাম প্রধান বিচারিক হাকিম আদালতে অভিযোগ দায়ের করলে ঘটনাটি প্রকাশ পায়।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, গত ২৭ অক্টোবর রাতে এ হত্যার ঘটনা ঘটলেও এর সঙ্গে জড়িতরা এতদিন তা গোপন রেখেছিল। এ মামলায় চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও ফটিকছড়ির বাগানবাজার ইউপির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রুস্তম আলী ও তাঁর ছেলে সাইফুল ইসলামসহ ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে। নিহত শিরিনের বাবা ও মামলার বাদী তাজুল ইসলামের করা অভিযোগ আমলে নিয়ে তা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধান বিচারিক হাকিম মুন্সি মোহাম্মদ মশিউর রহমান ফটিকছড়ির ভুজপুর থানার ওসিকে নির্দেশ দিলে পুলিশ মামলা গ্রহণ করে।
বাদী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘শিরিনের স্বাভাবিক মৃত্যু হলে আমরা তাঁর অভিভাবক হিসেবে আমাদের জানাতে পারত। কিন্তু চেয়ারম্যান বিষয়টি সম্পূর্ণ গোপন রেখে শিরিনের লাশ গত ২৭ অক্টোবর রাত সাড়ে ৩টায় মাটিচাপা দেয়।’ তাঁর অভিযোগ, স্ত্রীর মর্যাদা দাবি করায় চেয়ারম্যান ও তাঁর সহযোগীরা শিরিনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।