‘আলাদীনের চেরাগে’ পাল্টে গেছে টেকনাফ
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/05/22/photo-1432293105.jpg)
কদিন আগেও জায়গাটা ছিল ফাঁকা। কোথাও কোথাও কিছু ঝুপড়িঘর। এখন সেখানে তৈরি হচ্ছে বিলাসবহুল সব দালান, আধুনিক নকশার বাড়ি আর একের পর এক মার্কেট।
urgentPhoto
পিছিয়ে পড়া টেকনাফের জেলেপাড়া, মাঝিপাড়া আর নাজিরপাড়ার দিকে তাকালে এখন মনেই হবে না, এসব অঞ্চলে বছর কয়েক আগেও ছিল খুব নিম্ন আয়ের মানুষের বাস।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে ও অনুসন্ধানে জানা যায়, মানবপাচারের বদৌলতে আলাদীনের চেরাগের মতো পরিবর্তন ঘটেছে দালালদের জীবনে।
কোনো রকম অনুমতি ছাড়াই গড়ে উঠছে একের পর এক অবকাঠামো। অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব বিষয়ে জরুরি ভিত্তিতে তদন্ত প্রয়োজন।
টেকনাফ নাজিরপাড়ার নির্মাণকাজ চলছে এমন একটি ডুপ্লেক্স বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, শেষ মুহূর্তের কাজে দারুণ ব্যস্ততা নির্মাণশ্রমিকদের। অভ্যন্তরীণ নকশা তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা। দুই বছর আগে হালচাষ করা এই বাড়ির মালিক আখতার কামাল। তিনি তালিকাভুক্ত মানবপাচারকারী।
পাঁচ বিঘা জায়গার ওপর তৈরি করা হয়েছে বাড়িটি। কামাল জানান, ঘরের ভেতরের নানা ডিজাইনেই তিনি এরই মধ্যে ব্যয় করেছেন পাঁচ লাখ টাকা।
মাত্র দুই বছরের ব্যবধানে এমন বাড়ি নির্মাণের রহস্য না জানা গেলেও বাড়ির মালিক জানালেন, এই কাজে কোনো অনুমতি নেই তাঁর।
আখতার কামাল বাড়ির প্ল্যান পাস করার বিষয়ে বলেন, ‘এটা শিওর হই নাই, এখনো পাস করি নাই। পাস করে নেব আর কি...’
মূল সড়কের পাশেই দেখা যায় আরেকটি নির্মাণাধীন বেশ বড়ো আকারের বাড়ি। এলাকাবাসী জানায়, বাড়িটির মালিক শীর্ষ মানব পাচারকারী সাইফুল ইসলাম। র্যাবের অভিযানের পর থেকেই তিনি পলাতক। এর পাশেই মৌলভীপাড়ার পাঁচ তলার ভবনের মার্কেটের কাজ চলছে বেশ জোরেশোরে। মার্কেটটির মালিক আছেন আত্মগোপনে।
মাত্র বছর খানেক আগেও যারা ছিলেন লবণচাষী কিংবা মাঝি আজ তারা আধুনিক নকশার নতুন বাড়ির মালিক। তবে স্থানীয় প্রশাসনের কেউ এ প্রসঙ্গে কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
অপরাধ বিশ্লেষক নূর খান বলেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রে ফোর টোয়েন্টি কেস (৪২০ ধারায় মামলা) দেওয়া হচ্ছে। প্রতারণামূলক ইত্যাদি। ফলে দেখা যাচ্ছে, মানব পাচারের জন্য যে অপরাধ করে সে অপরাধে সঠিকভাবে মামলা রজু না হওয়ার কারণে অনেক ক্ষেত্রে তারা পার পেয়ে যাচ্ছে।’
সেই সঙ্গে স্থানীয়ভাবে সচেতনতা ও প্রতিরোধের দাবিও জানান এ অপরাধ বিশ্লেষক।