চরফ্যাশনে যুবলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২০
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/05/22/photo-1432299624.jpg)
ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার দক্ষিণ আইচায় আজ শুক্রবার সকালে যুবলীগের দুই পক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষে ২০ জন আহত হয়েছে। এ সময় দক্ষিণ আইচা বাজারের ১০টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে দক্ষিণ আইচা থানা যুবলীগের সভাপতি আবদুর রশিদসহ ২১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আবদুর রশিদ ও দক্ষিণ আইচা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. সবুজের পক্ষের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রগুলো জানায়, দক্ষিণ আইচা থানা ছাত্রলীগের সভাপতি রাসেল। একই কমিটির সহসভাপতি তাঁর ভাতিজা দুলাল। অপরদিকে দুলালের বাবা থানা যুবলীগের সভাপতি আবদুর রশিদ। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে ছাত্রলীগের সভাপতি রাসেল ও সাধারণ সম্পাদক লিমন পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। একদিকে চাচা রাসেল ও ভাতিজা দুলাল, অপরদিকে সাধারণ সম্পাদক লিমনের পক্ষ। রাসেল-দুলাল পক্ষের কর্মীরা সম্প্রতি লিমন পক্ষের কর্মী গিয়াসকে মারধর করলে ঘটনার সূত্রপাত হয়। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার দক্ষিণ আইচা বাজারে দুই পক্ষের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য আজ শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে মানিকা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শফিউল্লাহ হাওলাদারের মধ্যস্থতায় দুই পক্ষ দক্ষিণ আইচা বাজারে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সমঝোতা বৈঠকে মিলিত হয়।
শফিউল্লাহ হাওলাদার অভিযোগ করেন, বৈঠকের মধ্যে উত্তেজিত হয়ে যুবলীগের সভাপতি আবদুর রশিদ সাংগঠনিক সম্পাদক সবুজের ওপর হামলা চালান এবং ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন। ফলে সমঝোতা বৈঠক ভেস্তে যায়। ছাত্রলীগ ও যুবলীগের কর্মীরা সভাপতি রশিদ ও সাংগঠনিক সম্পাদক সবুজের পক্ষে বিভক্ত হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
দক্ষিণ আইচা বাজারের ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, সংঘর্ষের সময় উত্তেজিত যুবলীগ-ছাত্রলীগকর্মীরা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের আশপাশের অন্তত ১০টি দোকানে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করেছে। এসব দোকানের মধ্যে বেল্লালের স্টুডিও, অহিদের মুদি দোকান, কর্ণফুলী অয়েল মিল, জাহিদের চানাচুর কারখানা এবং মুন্সী মেডিকেল হল বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
খবর পেয়ে দক্ষিণ আইচা ও শশীভূষণ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। এ সময় পুলিশ যুবলীগের নেতা আবদুর রশিদসহ ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার হওয়া অন্যদের মধ্যে রয়েছেন দক্ষিণ আইচা থানা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ফিরোজ, যুবলীগ কর্মী মান্নান, এনজিও কর্মী মো. আলী, ব্যবসায়ী শাহাবুদ্দিন, তুহিন, রাহাত, সাত্তার ও কবির, জেলে বশির, রিকশাচালক সোহেল ও আমির হোসেন, ছাত্র মিরাজ, রিপন, সোহেল, জাকির, শাহীন, কাশেম ও সুমন, কৃষক কাশেম ও শ্রমিক হারুন।
আহতদের মধ্যে ইউসুফ নামের একজনকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এবং যুবলীগ নেতা সবুজ, নূর নবী, শহিদ, জামালসহ অন্যদের চরফ্যাশন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, দক্ষিণ আইচা হাসপাতাল ও গণস্বাস্থ্য হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
দক্ষিণ আইচা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ম ইনামুল হক জানান, পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে। গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত আছে। এ পর্যন্ত ১৮ জনকে আটক করা হয়েছে। মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।