আ. লীগ মুক্তিযুদ্ধের বিকৃত ইতিহাস উপহার দিচ্ছে : ফখরুল

স্বাধীনতা সংগ্রামের সাড়ে চার দশক পর আজকে আওয়ামী লীগ নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের ‘বিকৃত ইতিহাস’ উপহার দিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
এতে তরুণ প্রজন্ম মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে যাঁরা মুক্তিযুদ্ধের কথা বলছেন, মুক্তিযোদ্ধারা একমাত্র ব্যবসায়ী হয়ে দাঁড়িয়ে গেছেন। যাঁরা মুক্তিযুদ্ধ ছাড়া কোনো কথাই মুখ দিয়ে বলতে চান না, তারা গোটা জাতিকে, নতুন প্রজন্মকে একটা বিকৃত ইতিহাস দিচ্ছেন।’
এ সময় মির্জা ফখরুল ইসলাম ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসের কথা উল্লেখ বলেন, ‘১৯৭১ সালের পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর পুড়িয়ে দিয়েছিল, তাড়িয়ে দিয়েছিল, হত্যা করেছিল। আজ সেই বাংলাদেশে… অদৃষ্টের কী পরিহাস, সেই শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা শেখ হাসিনার শাসনামলে সেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে সেই হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর, মন্দির পুড়িয়ে দিয়ে তাদের নিঃশেষ করে দেওয়া হয়েছে।’
এসবের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার জন্য দলীয় নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, অন্যথায় পথ হারাবে স্বপ্নের বাংলাদেশ। আমাদের সংগ্রাম ন্যায়ের জন্য সংগ্রাম। আমাদের সংগ্রাম আমাদের অধিকারের জন্য। আমার দেশে আমি বাস করব। আমার দেশ আমি তৈরি করব। আমার দেশের লক্ষ্য আমিই স্থির করব। কারো কথায় আমরা চলব না বন্ধুরা।’
দলীয় নেতাকর্মীদের ‘দৃঢ় সংকল্প চিত্তে শপথ গ্রহণ’ করার আহ্বান জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সেই বাংলাদেশ, মুক্ত বাংলাদেশ, আমার বাংলাদেশ, মানুষের বাংলাদেশ তৈরি না করে আমরা ক্ষান্ত হব না। আমরা পরাশক্তিকে পরাজিত করে ইনশাল্লাহ জয়ী হব।’
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর মহানগর নাট্যমঞ্চে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বিএনপির আলোচনা সভায় এ সব কথা বলেন দলের মহাসচিব। সভায় অন্য বক্তারা অভিযোগ করেন, এখন দেশের গণতন্ত্র এবং স্বাধীনতার সংজ্ঞা আওয়ামী লীগের বাক্সে বন্দি। গণতন্ত্রহীনতা এখন বাংলাদেশের বড় সংকট।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘অনেকে, এমনকি আওয়ামী লীগের বুদ্ধিজীবীদের অনেকে এটা পছন্দ করেন না, যখন তারা স্বাধীনতার চেতনার কথা বলেন। কারণ, স্বাধীনতার চেতনা মানে কি একদলীয় শাসন? এটা কি বাংলাদেশের স্বাধীনতার চেতনা হতে পারে?’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সবচেয়ে বড় চেতনা ছিল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। কথা বলার যদি অধিকার না থাকে তাহলে স্বাধীনতার অর্থ কী? স্বাধীনতার সংজ্ঞা, গণতন্ত্রের সংজ্ঞা- আজকে আওয়ামী লীগের বাক্সের ভিতরে বন্দি।’
আলোচনা সভায় অন্য বক্তারা আরো বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভুলণ্ঠিত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। স্বাধীনতার দীর্ঘ সাড়ে চার দশক পার করলেও এখনো কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেনি বাংলাদেশ। আর এ জন্য আওয়ামী লীগকেই দায়ী করেন তাঁরা।