প্রধান বিচারপতির সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা ইউএলএফের

নতুন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে বিএনপিপন্থি ও সরকার বিরোধী আইনজীবীদের মোর্চা ইউনাইটেড লইয়ার্স ফ্রন্ট (ইউএলএফ)। আজ মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দক্ষিণ হলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন সংগঠটির নেতারা।
গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বাংলাদেশের অবসর গ্রহণ করেন। গত ১২ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে বাংলাদেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি। তিনি শপথ গ্রহণ করেন ২৬ সেপ্টেম্বর। আগামী ৮ অক্টোবর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের কোর্টরুম-১ এ প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানকে ঐতিহ্যগতভাবে সংবর্ধনা দেবে অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় ও সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন (এসসিবিএ)।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে ইউএলএফের আহ্বায়ক ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘লুণ্ঠিত ভোটাধিকার, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার, আইনের শাসন, স্বাধীন বিচার বিভাগ প্রতিষ্ঠা, আপসহীন দেশনেত্রী খালেদা জিয়াসহ সব গণতন্ত্রকামী রাজনীতিক, পেশাজীবী এবং মানবাধিকার কর্মীর মুক্তি, মিথ্যা মামলা ও ফরমায়েশি রায় বাতিলের দাবিতে আইনজীবীদের সঙ্গে নিয়ে ইউএলএফের আন্দোলন চলমান আছে। ইতোমধ্যে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, খুলনা, রাজশাহী, বগুড়া, বরিশালসহ প্রায় সব বিভাগীয় বার সমিতিতে আইনজীবী সমাবেশ ও পদযাত্রা সফলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।’
জয়নুল আবেদীন আরও বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত বেদনাহত মন নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হয়েছি। প্রধান বিচারপতি নিয়োগের পর থেকে ফুলের শুভেচ্ছা নিতে নিতে, এক পর্যায়ে সরকারি দলের ছাত্র সংগঠন ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটি সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের কাছ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা গ্রহণ করেন, যার সচিত্র প্রতিবেদন গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়। সুপ্রিম কোর্টের ৫২ বছরের ইতিহাসে একটি নজিরবিহীন ঘটনা এবং প্রবীণ আইনজীবীদের ভাষায় বিচার বিভাগের জন্য চরম বেদনার মুহূর্ত।’
জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘শপথ গ্রহণের দুদিনের মাথায় একটি জেলা সমিতির সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিতর্কিত পুলিশ অফিসার, আইনজীবী নিপীড়নকারী ও নিয়মিত মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী ডিবি হারুনের কাছ থেকে একটি তলোয়ার উপহার হিসেবে নেন প্রধান বিচারপতি। এতে বাংলাদেশের আইনজীবী সমাজ হতাশ-বিস্মিত হয়েছে। আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব পালন শুরু করতে না করতেই সংবর্ধনার মেলা ও নানাবিধ বক্তব্য প্রধান বিচারপতির মতো সর্বোচ্চ সাংবিধানিক বিচারিক পদকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে।’