বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, ‘একটি দেশ নিজেকে বাংলাদেশের বন্ধু দাবি করে, কিন্তু তারা বাংলাদেশিদের ওপর একতরফা ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে। তারাই আবার বাংলাদেশে মানবাধিকার, গণতন্ত্র এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলে থাকেন।’

বাংলাদেশিদের ওপর ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের মার্কিন সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে বিতর্কের মধ্যেই বুধবার (১১ অক্টোবর) রাজধানীতে একটি অনুষ্ঠানে অংশ নিতে এসে সাংবাদিকদের কাছে এ মন্তব্য করেন চীনের রাষ্ট্রদূত।

ওয়াশিংটন অবশ্য বলেছে, ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও এর আওতাধীন বাংলাদেশে অবস্থানকারী সেইসব মানুষের নাম বা সংখ্যা তারা প্রকাশ করবে না।

অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার চীনের নীতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেন রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। তিনি বলেন, ‘চীন কখনোই অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে না। বরং, আমরা বাংলাদেশকে বৃহত্তর অর্থনৈতিক সাফল্য এবং স্থানীয় জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নতিতে সহায়তা করতে চাই।’

চীনের রাষ্ট্রদূত সাংবাদিকদের বলেন, ‘দুঃসময়ের বন্ধুই প্রকৃত বন্ধু। বাংলাদেশের সত্যিকারের বন্ধু কে? জনগণই বলতে পারবে?’

বাংলাদেশে চীনা দূতাবাস এনাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ৭০০ সেট ডেঙ্গু কিট হস্তান্তর করেছে। এই কিটগুলো দিয়ে ১৮ হাজারেরও বেশি মানুষের পরীক্ষার চাহিদা মেটাবে।

রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও চীন সরকার বাংলাদেশে ডেঙ্গু মহামারি নিয়ে গভীর উদ্বিগ্ন। ডেঙ্গু প্রতিরোধে চীন বাংলাদেশকে ২৫ মিলিয়ন আরএমবি (৩৫ লাখ মার্কিন ডলার) সহায়তা ঘোষণা করেছে।’

চীনের রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘এটি কেবল একটি সূচনামাত্র এবং কয়েক দিনের মধ্যে চীন থেকে আরও বড় আকারে ডেঙ্গু প্রতিরোধী সহায়তা আসবে।’

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘বর্তমান ডেঙ্গুর প্রকোপ প্রশমনে আমাদের যৌথ প্রচেষ্টায় দুই দেশ ও জনগণের মধ্যে বন্ধুত্বের বন্ধন আরও দৃঢ় হবে। বাংলাদেশের পরীক্ষিত বন্ধু ও কৌশলগত অংশীদার হিসেবে চীন জনস্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ঢাকার সঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা গত তিন বছর ধরে কোভিড-১৯ মহামারি প্রতিরোধে যৌথ লড়াইয়ের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে।’

এ সময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান এবং এনাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. আনোয়ারুল কাদের নাজিম উপস্থিত ছিলেন।