ঈদে নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকবে দেশ, যানজট নিরসনে আলাদা মনিটরিং টিম
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2024/04/01/home_min.jpg)
পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সারা দেশ নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা থাকবে। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রোধে ইউনিফর্মধারী পুলিশের পাশাপাশি মোতায়েন থাকবেন সাদা পোশাকে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এসব তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে আজ সোমবার (১ এপ্রিল) সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত আসন্ন ঈদুল ফিতরে দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থতি পর্যালোচনা, ঈদের পূর্বে গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন-ভাতাদি পরিশোধ, সড়ক মহাসড়ক নিরাপদ ও যানজটমুক্ত রাখাসহ প্রাসঙ্গিক অন্যান্য বিষয়ে বৈঠক হয়। সেখানে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখার পাশাপাশি যানজট নিরসনে পদক্ষেপ নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে তৈরি পোশাক শিল্প কারখানার শ্রমিকদের বেতন ভাতা যথাসময়ে পরিশোধের বিষয়ে কারখানা মালিকদের আহ্বান জানানো হয়।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন তৈরি পোশাক কারখানা মালিক শ্রমিকদের নেতা, পরিবহণ মালিকদের প্রতিনিধিরাও। বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত তুুলে ধরেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতরে দেশজুড়ে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখার বিষয়ে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রোধে ইউনিফর্মধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা মোতায়েন থাকবেন। রাজধানীর কূটনৈতিক পাড়াসহ সকল গুরুত্বপূর্ণ স্থানে, বড় শহর ও বন্দরগুলোতে পুলিশের টহল থাকবে। রাস্তায় ও মোড়ে চেকপোস্ট স্থাপন, নৌপথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার বিশেষ ব্যবস্থা এবং লঞ্চ, বাস টার্মিনালে অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টির বিরুদ্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয় থাকবে।
মন্ত্রী বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটির আগে গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন বোনাস দেওয়ার বিষয়ে বিজিএমইএ ও বিকেএমইএ সম্মত হয়েছেন। ঈদের পূর্বে শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হবে। সাধারণ জনগণ যেন ঈদ উপলক্ষে কেনাকাটা করতে পারে, সেজন্য মার্কেট ও শপিং মলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। র্যাবের নিরাপত্তা টহল বাড়ানো হবে। মার্কেটগুলোতে রাত্রিকালীন নিরাপত্তা থাকবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঘরমুখো মানুষের নিরাপত্তা দিতে বাস, ট্রেন ও লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহণ করা যাবে না। করলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, যানজট নিরসনে রেল স্টেশন, বাস ও লঞ্চ টার্মিনালে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করে মনিটর করবেন। যানজট নিরসনে হাইওয়ে পুলিশ, র্যাব, জেলা পুলিশ সমন্বয় করে কাজ করবেন। যানজট নিরসনে সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগ কর্তৃক চিহ্নিত স্পটে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করে যানজট পরিস্থিতি মনিটর করবেন। এরইমধ্যে বিভিন্ন সড়কে স্থায়ী ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। মহাসড়কে নির্দিষ্ট স্থানে যানজট প্রবণ এলাকায় র্যাকার থাকবে। ড্রোন ব্যবহার করা হবে।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, সড়ক, মহাসড়কে চাঁদাবাজি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হবে। ঈদুল ফিতরের ছুটির সময় বিভিন্ন সড়ক, মহাসড়ক, নৌপথে আকস্মিক দুর্ঘটনা উদ্ধারকাজের জন্য ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের টিম, রেসকিউ বোট, ডুবুরিসহ ফায়ারসার্ভিসের সকল সরঞ্জাম নিয়ে প্রস্তুত থাকবেন। প্রয়োজনে কোস্টগার্ড সঙ্গে থাকবে। শিল্প এলাকায় ফায়ার সার্ভিস কোস্ট গার্ড প্রস্তুত থাকবে। সীমান্ত এলাকায় কোস্টগার্ড ও বিজিবি সতর্ক দৃষ্টি রাখবে। প্রয়োজনে ৯৯৯-সহ সবকিছু পুলিশকে যেকোনো স্থান থেকে যোগাযোগ করা যাবে। ছুটিতে পর্যটনকেন্দ্রে দুর্ঘটনা ও অপ্রত্যাশিত ঘটনা রোধে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী সক্রিয় থাকবে।
তৈরি পোশাক শ্রমিকদের ছুটি ধাপে ধাপে দেওয়া হবে কি না সে প্রশ্নের জবাবে বলেন, ৯ এপ্রিল একদিন ছুটির জন্য সুপারিশ করা হয়েছিল, কিন্তু কেবিনেট সেটা নাকচ করে দিয়েছে। কিন্তু, সরকারি বা বেসরকারি সকলে এই ছুটি যার যার প্রাপ্য ছুটি থেকে নিতে পারবেন। তিনি আরও বলেন, তৈরি পোশাক শিল্প শ্রমিকদের বিষয়ে মালিক শ্রমিক একসঙ্গে বসে ঠিক করবে। যাতে ধাপে ধাপে ছুটি দেওয়া হয় সেটার উদ্যোগ নেবেন।