ইসির কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র তৈরি করত চক্রটি
জালিয়াতির মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ওয়েবসাইট থেকে নতুন করে ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তৈরি ও এনআইডি সংশোধন করে আসছিল একটি সংঘবদ্ধ প্রতারকচক্র। এ চক্রে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারাও জড়িত। চক্রের মূলহোতা ও ইসির এক ডাটা অপারেটরকে গ্রেপ্তারের পর এ তথ্য জানিয়েছে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম এন্ড ট্রান্সনাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি)।
আজ বৃহস্পতিবার (৯ মে) দুপুরে মিন্টু রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার ও সিটিটিসির প্রধান মো. আসাদুজ্জামান এ তথ্য জানান।
মো. আসাদুজ্জামান বলেন, চক্রটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হারানো এনআইডির কপি উত্তোলন, এনআইডি সংশোধন, জন্ম নিবন্ধনের ডিজিটাল কপি ও নাম সংশোধন এবং কোভিড-১৯ টিকার কপি ও টিন সার্টিফিকেটের কপি সরবরাহের বিজ্ঞাপন দিয়ে গ্রাহক সংগ্রহ করতো। গ্রাহকদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে দীর্ঘদিন ধরে এসব কাজ করে আসছিল এ চক্রের সদস্যরা। এমন তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার পাবনা থেকে লিটন মোল্লা (২৩) ও বাগেরহাট থেকে জেলার থানা নির্বাচন কমিশন অফিসের ডাটা অপারেটর মো. জামাল উদ্দিনকে (৩৮) গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার লিটনকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে আসাদুজ্জামান বলেন, লিটন নতুন ভুয়া এনআইডি ও এ সংক্রান্ত তথ্যাবলী নির্বাচন কমিশনে কর্মরত মো. জামাল উদ্দিনের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন অফিসের সার্ভার থেকে সংগ্রহ করতো। এসব কাজের জন্য তারা গ্রাহকদের সঙ্গে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে অর্থ লেনদেন করতো। এ ছাড়া চক্রটি জাল এনআইডি তৈরি, হারানো এনআইডির কপি উত্তোলন ও সংশোধন করা, সিম কার্ডের রেজিস্ট্রেশনের তথ্য ও এর বিপরীতে রক্ষিত এনআইডি প্রদান, এনআইডির পূর্ণাঙ্গ বায়োমেট্রিক তথ্য প্রদান, ভুয়া কোভিড-১৯ টিকা কার্ড বানিয়ে দেওয়া, ভুয়া জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি ও টিন সনদের তৈরি করে দিত।
মো. আসাদুজ্জামান আরও বলেন, এভাবে জালিয়াতি মাধ্যমে চক্রের হোতা লিটন কোটি টাকা আয় করেছে। গ্রেপ্তার জামাল ইসির সার্ভার সহযোগিতা করে অবৈধভাবে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
এক প্রশ্নের উত্তরে সিটিটিসির প্রধান বলেন, এই প্রতারকচক্রের সঙ্গে ইসির ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্তরত কিছু অসাধু কর্মচারী জড়িত। এ ছাড়া আর কারা কারা চক্রের সঙ্গে জড়িত তাদের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। যারাই জড়িত থাকুক সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।