পরকীয়ার জেরে দেবর হত্যা : প্রেমিকের আমৃত্যু, প্রেমিকার যাবজ্জীবন
নরসিংদীর মনোহরদীতে শাহ পরান বাবু (২১) নামে এক দর্জিকে হত্যা মামলায় তাঁর ভাবিকে যাবজ্জীবন এবং ভাবির পরকীয়া প্রেমিককে আমৃত্যু কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ রোববার (১২ মে) অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতের বিচারক শামীমা পারভীন এ রায় দেন। এ সময় নির্দোষ হওয়ায় দুজনকে খালাস দেন আদালত।
নিহত দর্জি শাহ পরান বাবু মনোহরদী উপজেলার হাররদিয়া এলাকার মৃত নুরুল ইসলামের ছেলে। তিনি হাতিরদিয়া বাজারে দর্জির কাজ করতেন।
দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন উপজেলার দক্ষিণ হাররদিয়া এলাকার সোহেল মিয়া (২৩) ও একই এলাকার শারমিন সুলতানা (২৩)।
আদালত ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর হাররদিয়া এলাকার বকুল মিয়ার বাড়ির পাশের পাকা রাস্তা থেকে শাহপরানের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে এ ঘটনায় তাঁর মা মিনারা বেগম থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন। পরে পুলিশ তদন্ত করে ঘটনার সঙ্গে জড়িত সোহেল, সাইফুল (২৩), মুরাদ (২০) ও শারমিনকে গ্রেপ্তার করে। পরে সোহেল আদালতে স্বীকারোক্তি জবানবন্দি দেন। তিনি জানান, শাহপরাণের ভাই প্রবাসে থাকেন। এ সুযোগে তাঁর ভাবি শারমিনের সঙ্গে তাঁর (সোহেল) পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিষয়টি শাহপরান জানতে পেরে ভাবিকে নিষেধ করেন। এজন্য সোহেল ও শারমিন পরিকল্পনা করে ২০১৭ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর তাঁকে গলাকেটে হত্যা করে সড়কে মরদেহ ফেলে রেখে যান। দুজনেই হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। এরপর সোহেল হাইকোর্ট থেকে জামিনে বের হন।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট এম এ এন অলিউল্লাহ ও অ্যাডভোকেট আসাদুজ্জামান আর আসামি পক্ষে আইনজীবী ছিলেন, অ্যাডভোকেট মো. শাজাহান মিয়া ও অ্যাডভোকেট রোজি।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এম এ এন অলিউল্লাহ বলেন, ১২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত সোহেলকে সরাসরি গলাকেটে হত্যা করায় তাঁকে আমৃত্যু কারাদণ্ড আর ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকায় শারমিনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন। আর নির্দোষ প্রমাণিত হওয়ায় মুরাদ ও সাইফুলকে খালাস দেওয়া হয়। বর্তমানে শারমিন জেলহাজতে থাকলেও সোহেল পলাতক রয়েছেন। আমরা এ মামলার রায়ে সন্তুষ্ট।