খালেদা জিয়ার প্রতি অমানবিক ও অসাংবিধানিক আচরণ করা হচ্ছে: ইউট্যাব
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2024/06/24/iuttyaab.jpg)
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব)। সংগঠনটি বলছে, আওয়ামী লীগ সরকার বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি অমানবিক ও অসাংবিধানিক আচরণ করছে। অবিলম্বে তাকে মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
আজ সোমবার (২৪ জুন) ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব অধ্যাপক ড. মো. মোর্শেদ হাসান খান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। তিনি বর্তমানে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের সিসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড একাধিকবার পরামর্শ দিয়েছে যে, খালেদা জিয়া এখন জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। দেশে আর তার চিকিৎসা করানোর অবস্থা নেই। কেননা তার চিকিৎসার জন্য যে ধরনের যন্ত্রপাতি দরকার সেসব বাংলাদেশে নেই। ফলে খালেদা জিয়াকে বাঁচাতে হলে বিদেশে অ্যাডভান্স সেন্টারে নিয়ে চিকিৎসা করানো অতি জরুরি।
বিবৃতিতে সংগঠনের নেতারা বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করছি যে, জনম্যান্ডেটহীন আওয়ামী লীগ সরকার এ বিষয়ে ভ্রুক্ষেপ করছে না। বরং খালেদা জিয়ার প্রতি অমানবিক ও অসাংবিধানিক আচরণ করছে। আমরা সরকারকে রাজনীতির ঊর্ধ্বে গিয়ে মানবিক দিক বিবেচনা করে তাকে অবিলম্বে মুক্তি ও বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ দেওয়ার আহবান জানাই।’
সংগঠনের নেতারা বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বয়স এখন ৭৯ বছর। শর্ত সাপেক্ষে সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি পেলেও প্রবীণ বয়সে খালেদা জিয়া কার্যত কারাবন্দি। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই নানা রোগে আক্রান্ত। ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যাওয়ার পর তিনি আরও অসুস্থ হয়ে পড়েন। দীর্ঘ চার বছর তার যথাযথ কোনো চিকিৎসা হয়নি। কারাগারে অমানবিক পরিবেশেও তিনি অনেক নতুন রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। হার্ট, লিভার, কিডনি ও চোখের সমস্যা ছাড়াও পুরনো আর্থ্রাইটিস এবং নতুন করে কোভিড-১৯ আক্রান্ত ও কোভিড পরবর্তী জটিলতায় তার শারীরিক অবস্থা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
ইউট্যাবের শীর্ষ নেতারা বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার প্রতি সরকার অমানবিক ব্যবহার ও আচরণ করছে। তার মানবাধিকার ও মানবতা যেভাবে হরণ করা হয়েছে, দেশে সত্যিকার অর্থে গণতান্ত্রিক সরকার থাকলে, আইনের শাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা থাকলে এটা হতো না।
শিক্ষক নেতারা আরও বলেন, দেশের প্রথম ও নারী প্রধানমন্ত্রী (সাবেক) খালেদা জিয়া বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ। তার চিকিৎসকরা অসুস্থতার যে বিবরণ দিয়েছেন, তা খুবই উদ্বেগজনক। আমরা মনে করি, দেশের একজন শীর্ষ রাজনীতিক, সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বয়োজ্যেষ্ঠ নাগরিক হিসেবে তার যথাযথ সুচিকিৎসা পাওয়া ন্যূনতম অধিকার রয়েছে।
আদালতের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে স্থায়ী জামিনে মুক্তি দিয়ে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার সুযোগ দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান শিক্ষক নেতারা।
খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে মামলা দেওয়া হয়েছে। যে অভিযোগ তার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে, সেসবের সঙ্গে ন্যূনতম কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। সেই মামলায় তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে সাজা দেওয়া হয়েছে! এ ঘটনায় প্রমাণিত হয় যে, খালেদা জিয়াকে সাজা দেওয়া হয়েছে শুধুমাত্র এক ব্যক্তির মনের আক্রোশ মেটাতে। যার প্রমাণ হলো- নিম্ন আদালত পাঁচ বছর সাজা দেওয়ার পর হাইকোর্ট সেটি ১০ বছর করে দিল। তাতেই মনে হয়েছে যে, সবকিছু একজনের নিয়ন্ত্রণে।