জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ফের আপিল শুনানি আজ
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ১০ বছরের সাজার বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি আজ বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) আবারও অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগে এ শুনানি হবে।
গতকাল বুধবার আপিলের দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে খালেদা জিয়ার কারাদণ্ডের রায় বাতিলের আরজি জানান তার আইনজীবীরা।
আদালতে বেগম খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করছেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। তার সঙ্গে আছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। দুদকের পক্ষে আছেন অ্যাডভোকেট আসিফ হোসাইন।
দ্বিতীয় দিনের শুনানিতে বেগম জিয়ার আইনজীবীরা বলেন, ‘মিথ্যা মামলায় তাকে সাজা দেওয়া হয়েছে, চিকিৎসার জন্য বারবার আবেদন করেও সাড়া পাওয়া যায়নি, উল্টো তাকে দুর্নীতিবাজ অপবাদ দেওয়া হয়েছে। জীবন থেকে কেড়ে নেওয়া হয়েছে কয়েকটা বছর, এটি কে ফিরে দেবে?’
শুনানিতে আইনজীবী কায়সার কামাল বলেন, ‘জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের কোনো সেটেলার খালেদা জিয়া নন। তিনি কোনো দায়িত্বেও ছিলেন না। ট্রাস্টের সম্পত্তিতে তাঁর কোনো হস্তক্ষেপ ও সই নেই। রাজনৈতিক হয়রানির জন্য বিএনপি চেয়ারপারসনকে নির্বাচন (২০১৮ সাল) থেকে বিরত রাখতে ওই রায় অস্ত্র (টুল) হিসেবে কাজ করেছে। যে অর্থের কথা বলা হয়েছে, তা ব্যাংক হিসাবে রক্ষিত আছে। এই অর্থের কোনো তসরুপও হয়নি। হাইকোর্টের রায় অনুমাননির্ভর। ফৌজদারি অপরাধের ক্ষেত্রে ধারণার ভিত্তিতে কাউকে সাজা দেওয়া যায় না।’
ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘মনগড়া ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাজা দিয়ে খালেদা জিয়াকে কারাগারে রাখা হয়। আমরা শুনানি করেছি, আগামীকাল আবার শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। আশা করি তিনি ন্যায়বিচার পাবেন।’
এর আগে গত ১১ নভেম্বর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ১০ বছরের সাজার বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে করা আবেদন) মঞ্জুর করেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে খালেদা জিয়াকে দেওয়া ১০ বছরের সাজা স্থগিত করেন আদালত। পাশাপাশি খালেদা জিয়াকে আপিলের সারসংক্ষেপ দুই সপ্তাহের মধ্যে দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন বিচারিক আদালত। একইসঙ্গে এ মামলার অন্য পাঁচ আসামির প্রত্যেককে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন খালেদা জিয়া, কাজী সালিমুল হক কামাল ও ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ। পরে ২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ খালেদার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন। হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে লিভ-টু আপিল করেন খালেদা জিয়া।