অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত
ঢাকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্র্যাসি এন জ্যাকবসন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি তার দেশের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করে বলেছেন, আমরা একটি জাতি হিসেবে আপনাদের সরকারকে বিভিন্ন বিষয়ে সহায়তা করতে প্রস্তুত। বাংলাদেশে উন্নয়ন ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করবে।
সোমবার (২০ জানুয়ারি) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে মার্কিন রাষ্ট্রদূত একথা বলেন।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টা চলমান সংস্কার উদ্যোগ, জুলাই ঘোষণাপত্র নিয়ে রাজনৈতিক ঐকমত্য গড়ে তোলার প্রচেষ্টা এবং পরবর্তী সাধারণ নির্বাচন পরিকল্পনা সম্পর্কে আলোচনা করে প্রধান উপদেষ্টা জানান, ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকেই রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে ঐকমত্যের প্রত্যাশা করছেন। এ পর্যন্ত আমি কোনো ভিন্ন মত শুনিনি। তিনি জুলাই ঘোষণাপত্র বিষয়ে ঐকমত্য গড়ে তোলার রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকে ‘কঠিন’উল্লেখ করে বলেন, প্রস্তাবিত ঘোষণাপত্রের মূল বিষয়বস্তু হবে ‘ঐক্য’।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সরকার শুধু একটি সুবিধাদাতা ভূমিকা পালন করবে। আমার কাজ হচ্ছে ঐকমত্য গড়ে তোলা। আমি কোনো ধারণা চাপিয়ে দিচ্ছি না। রাজনৈতিক দলগুলো সংস্কার প্রস্তাবের বিষয়ে একমত হলে, সরকার তাদের তা স্বাক্ষর করার অনুরোধ করবে, যেন একটি ‘জুলাই চার্টার’গড়ে তোলা যায়। ‘আমরা জানি না বিষয়বস্তুতে অনেক কিছু থাকবে, নাকি কিছু বিষয় থাকবে।’
ড. ইউনূস আরও বলেন, এটি কঠিন কাজ, আমাদের রয়েছে বিভিন্নমুখী মতামত। তবে প্রক্রিয়াটি শুরু হয়েছে। একবার স্বাক্ষরিত হলে আমাদের রাজনীতি জুলাই চার্টারের ওপর ভিত্তি করে চলবে।
এ সময় রাষ্ট্রদূত ট্র্যাসি এন জ্যাকবসন কয়েকজন সাংবাদিক গ্রেপ্তার ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার কিছু রিপোর্ট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ও রাষ্ট্রদূত ট্র্যাসি এন জ্যাকবসন বাংলাদেশের সঙ্গে প্রতিবেশী দেশগুলোর সম্পর্ক, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে অগ্রগতি ও মিয়ানমারের নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশ তার প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ককে মূল্যায়ন করে। এই ধারণা থেকেই সার্ক সৃষ্টি হয়েছিল এবং আমরা এর উদ্ভাবক।
সার্ক পুনরুজ্জীবিত করার সাম্প্রতিক উদ্যোগ ও এটিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মতো একটি প্ল্যাটফর্মে রূপান্তরিত করার পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন তিনি।
প্রধান উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের তুলা আমদানির শীর্ষস্থানে রয়েছে এবং তিনি দেশটিকে আরও বেশি পোশাক ও টেক্সটাইল পণ্য আমদানির আহ্বান জানান; যা যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলার বৃহত্তর আমদানির অর্থ দেবে।
এ সময় প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি-বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।