দেশকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরাতে সরকারকে সহযোগিতা করছি : আমীর খসরু
দেশ ও প্রবাসীদের কল্যাণে ভবিষ্যতে নজর দেওয়া হবে জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘সরকারকে সহযোগিতা করছি, যাতে দেশ যত দ্রুত সম্ভব একটি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। এর বিকল্প নেই। এর বাইরে অন্য কোনো রাজনৈতিক প্রক্রিয়া করতে গেলে মানুষের মনে সন্দেহ ও ভিন্ন ধারণা তৈরি হবে। সেটা হবে অগণতান্ত্রিক। আমরা শেখ হাসিনার পতনের আগেই ৩১ দফা এবং সাত বছর আগে ভিশন-২০৩০ ঘোষণা করেছি, যা বাস্তবায়নে আমরা জাতির কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’
আজ বুধবার (২২ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীতে জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন আমীর খসরু। ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্রায়ন ও উন্নয়নে বহির্বিশ্ব বিএনপির ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা ও মতবিনিময় সভার আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির নেতারা।
যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সভাপতি আব্দুল লতিফ সম্রাটের সভাপতিত্বে ও বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি গিয়াস আহমেদের পরিচালনায় সভায় বক্তব্য দেন জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুল লতিফ জনি, মহিউদ্দিন আহমেদ ঝিন্টু, ফ্লোরিডা বিএনপির সভাপতি ও মুক্তিযোদ্ধা দলের কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক সম্পাদক ইমরানুল হক চাকলাদার, নিউইয়র্ক স্টেট বিএনপির সভাপতি অলিউল্লাহ আতিকুর রহমান, বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান সাইদ, যুক্তরাষ্ট্র যুবদলের সাবেক সভাপতি কামরুজ্জামান বাবু, কাউন্সিলর সুরাইয়া, অস্ট্রেলিয়া স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মুসলেহ উদ্দিন হাওলাদার আরিফ, কানাডা মহিলা দলের নাজমা হক ও কানাডা নর্থ বিএনপির সভাপতি তৌফিক এজাজসহ অন্যান্যরা।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘আন্দোলনের সফলতা, দেশের ১৮ কোটি মানুষের সফলতা। যার যার অবস্থান থেকে সবার অবদান আছে। প্রবাসীদের ত্যাগ, অবদান রয়েছে। অনেকেই বলেছেন, প্রবাসীরা নিরাপদ জোনে থেকে আন্দোলন করেছে। কিন্তু তাদের পরিবার ও স্বজনরা বাংলাদেশে কীভাবে নিগৃহীত হয়েছেন, আমরা জানি। বাংলাদেশের মতো এত সহজে প্রবাসে আন্দোলন করা যায় না। স্টেট ডিপার্টমেন্টের সামনে বা বিশ্বব্যাংকের সামনে জমায়েত করা এত সহজ না। তারপরও বিএনপির হাজার হাজার লোক রাজপথে আন্দোলন করেছেন। আমরা তাদের অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাই। দেশ ও প্রবাসীদের কল্যাণে যা করা দরকার, সেদিকে আমরা নজর রাখব, ইনশাআল্লাহ।’
বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘প্রবাসীরা কিন্তু বাংলাদেশে ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে রেমিট্যান্স পাঠিয়ে এবং রেমিট্যান্স বন্ধ করে যুদ্ধ করেছে। তারা দেশ ও জাতির প্রতি কমিটমেন্ট রেখেছে। তার ফলাফল জাতি পেয়েছে।’
শেখ হাসিনার পতনের পেছনে প্রবাসীদের অবদান নিয়ে একটি ডকুমেন্টারি রেকর্ড করার পরামর্শ দেন আমীর খসরু।
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘অনেকেই আন্দোলনে অনেক পরে যোগ দিয়েছেন। তারা আমেরিকায় হোয়াইট হাউসের সামনে, ব্রাসেলস, জাপান, লন্ডন ও অস্ট্রেলিয়ার আন্দোলন দেখেনি। এই আন্দোলনের পেছনে ড্রাইভ দিয়েছেন তারেক রহমান। খালেদা জিয়া ড্রাইভ দিয়েছেন। তিনি নিজে জেল খেটেছেন। পুরো আন্দোলন ড্রাইভ করেছে বিএনপি। এটা রেকর্ড থাকা দরকার।’
প্রবাসীদের দাবি দাওয়া প্রসঙ্গে আমীর খসরু বলেন, ‘আপনাদের দেশপ্রেম ও ভালোবাসা শেষ হলে চলবে না। আন্দোলন শেষ হয়নি। আপানাদেরকে মূল্যায়ন করা হবে।’
আমীর খসরু আরও বলেন, ‘স্বৈরাচার সরকার তো দেশের মালিকানা নিজেদের হাতে নিয়েছিল। দেশ আজ খাদের কিনারায়। সুতরাং, জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দিতে হলে সুষ্ঠু নির্বাচন প্রয়োজন। জনগণের কাছে জবাবদিহিতা থাকতে হবে। কিন্তু গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অব্যাহত না থাকায় দেশের এই সংকট। সংস্কার হলো একটা চলমান প্রক্রিয়া। আপনারা বিশেষ কিছু সংস্কার করতে চাইলে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আসুন। শুধু ৫-১০ জন বসে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করা যায় না। সেটা গ্রহণযোগ্য হবে না। অতএব জনগণের কাছে যেতে হবে।’