পলকের এ পর্যন্ত ৫৮ দিন রিমান্ডের আদেশ : আইনজীবী
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/01/22/plk.jpg)
রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার হত্যাচেষ্টা মামলায় সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের দুদিনের রিমান্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (২২ জানুয়ারি) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জি এম ফারহান ইশতিয়াক এ আদেশ দেন। এর আগে আজ ঢাকার সিএমএম আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামিদের হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক তার দুদিন রিমান্ডের আদেশ দেন।
শুনানির শুরুতে জুনাইদ আহমেদ পলকের আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন আদালতকে বলেন, ‘মাননীয় আদালত ইতোমধ্যে আমার মক্কেলের ৫৮ দিনের রিমান্ডের আদেশ হয়েছে। এর মধ্যে তিনি রিমান্ড খেটেছেন ৩৪ দিন। রিমান্ড খাটা বাকি আছে ২০ দিন। আবার হত্যাচেষ্টা মামলায় রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। আমার মক্কেলকে আর কত দিন রিমান্ডে নেওয়া হবে?’
ফারজানা ইয়াসমিন আদালতে আরও বলেন, ‘আগেও আসামিকে বহুবার রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। কিন্তু নতুন কোনো তথ্যপ্রমাণ আসেনি। বরং বারবার রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার কারণে আমার মক্কেল অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। আগে রিমান্ডে থাকা অবস্থায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে হাসপাতালেও ভর্তি করা হয়েছিল। যদি আবার জিজ্ঞাসাবাদ করতে হয়, তাহলে তাঁকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেওয়া হোক। রিমান্ডে নেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই।’
ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী শুনানিতে বলেন, ‘জুলাই-আগস্টে গণহত্যা হয়েছে। এক হাজারের বেশি মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। আরও কয়েক হাজার মানুষকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছিল। বহু মানুষ চোখ হারিয়েছে। শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। আর ফ্যাসিস্ট হাসিনার অন্যতম সহযোগী হলেন জুনাইদ আহ্মেদ পলক। হাসিনার সঙ্গে গণভবনে বসে অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র করেছেন পলক।’
পিপি ওমর ফারুক ফারুকী আরও বলেন, ‘মাননীয় আদালত, রিমান্ডতো মাত্র শুরু হয়েছে। প্রতিটি হত্যা মামলায় জুনাইদ আহ্মেদ পলকসহ অন্যদের রিমান্ড চাওয়া হবে। কারণ, প্রতিটি হত্যার ষড়যন্ত্রে রয়েছেন জুনাইদ আহ্মেদ পলক। তিনি ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়েছিলেন। জুলাই-আগস্ট হত্যাকাণ্ডের অন্যতম ষড়যন্ত্রকারী হলেন এই পলক।
ফারুকী আরও বলেন, বারবার আসামিপক্ষ থেকে বলা হয়, মামলার এজাহারে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ নেই। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, এজাহারে যা-ই থাকুক, তদন্তকারী কর্মকর্তার দায়িত্ব হচ্ছে নিবিড়ভাবে তদন্ত করে ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করা। ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার পর তাঁর পিএস মুহিতুল তখন লালবাগ থানায় একটি চার লাইনের জিডি করেছিলেন। ২১ বছর পর ওই চার লাইনের সূত্র ধরে তদন্ত কর্মকর্তা বিস্তৃত তদন্ত করেছেন। পাঁচ হাজার পৃষ্ঠার তদন্ত হয়েছে। এই হত্যা মামলায় আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা হয়েছে। সুতরাং তদন্তকারী কর্মকর্তার কাজই হচ্ছে ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করে আদালতকে প্রতিবেদন দেওয়া।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে, গত বছরের ১৯ জুলাই মোহাম্মদপুর থানাধীন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ভ্যানচালক ইনছান আলী ভ্যান নিয়ে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে আসামিদের ছোড়া গুলিতে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মা গত ১৩ নভেম্বর মোহাম্মদপুর থানায় ২৬৬ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।