ছুটির দিনেও ঢাকার বাতাস ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’, দূষণের শীর্ষে
ঢাকা শহরের বাতাস ফের ‘খুবই অস্বাস্থ্যকর’ পরিস্থিতিতে চলে এসেছে। আজ শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে ২৩০ একিউআই স্কোর নিয়ে দূষিত বাতাসের শহরগুলোর তালিকায় শীর্ষে উঠে এসেছে শহরটি।
বৃহস্পতিবারও বাতাস ছিল নাগরিকদের জন্য খুবই অস্বাস্থ্যকর। একিউআই সূচক অনুসারে, কণা দূষণের একিউআই মান ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে চলে এলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়।
ভিয়েতনামের হো চি মিন সিটি, ভারতের দিল্লি ও কম্বোডিয়ার নম পেন শহরগুলো যথাক্রমে ২২০, ১৯৮ এবং ১৮৭ একিউআই স্কোর নিয়ে তালিকার তালিকায় যথাক্রমে দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে রয়েছে।
যদি একিউআই স্কোর ৫০ থেকে ১০০ এর মধ্যে থাকে, তখন বায়ুর গুণমানকে ‘মাঝারি’ বলে বিবেচনা করা হয়। সূচক ১০১ থেকে ১৫০ এর মধ্যে হলে ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ সময় সাধারণত সংবেদনশীল ব্যক্তিদের দীর্ঘ সময় ধরে বাইরে না থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়। স্কোর ১৫১ থেকে ২০০ এর মধ্যে হলে বায়ুমান ‘অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়। সেটা বেড়ে ২০১ থেকে ৩০০ এর মধ্যে চলে এলে ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বলে মনে করা হয়। একিইউ স্কোর ৩০১ এর বেশি হলে বায়ুমান ‘বিপজ্জনক’ পর্যায়ে পৌঁছায়। এতে বাসিন্দাদের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করে।
একিউআই সূচক পাঁচটি দূষণের ওপর নির্ভরশীল। সেগুলো হলো—অতিক্ষুদ্র বস্তুকণা (পিএম১০ ও পিএম২.৫), এনও২, সিও, এসও২ ও ওজোন। ঢাকা দীর্ঘদিন ধরে বায়ুদূষণজনিত সমস্যায় জর্জরিত। এর বায়ুর গুণমান সাধারণত শীতকালে অস্বাস্থ্যকর হয়ে ওঠে এবং বর্ষাকালে উন্নত হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ সংস্থার (ডব্লিউএইচও) তথ্যমতে, বায়ুদূষণের কারণে প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ৭০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। বায়ুদূষণে প্রধানত স্ট্রোক, হৃদরোগ, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, ফুসফুসের ক্যানসার ও শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণ থেকে মৃত্যুর হার বাড়ে।
২০১৯ সালের মার্চে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, ঢাকার বায়ুদূষণের তিনটি প্রধান উৎস হলো—ইটভাটা, যানবাহনের ধোঁয়া ও নির্মাণ সাইটের ধুলো।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘দূষণে শহরটি ক্রমাগত বসবাসের অযোগ্য হলেও সরকার কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না।’
সম্প্রতি পরিবেশ, বন ও জলবায়ু বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ লক্ষ্যে একটি টাস্কফোর্স গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। টাস্কফোর্সটি আগামী বর্ষাকাল পর্যন্ত কাজ করবে।