এবার বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা কঠোর : আইজিপি
বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে অন্য বছরে তুলনায় এবার আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা কঠোর হবে। নিরাপত্তায় পুলিশের পাশাপাশি থাকবে ১০ হাজার তাবলিগ জামাতের সাথী। আজ বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিশ্ব ইজতেমা ময়দান পরিদর্শনে এসে গণমাধ্যমকে এ কথা বলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম।
আইজিপি বলেন, জুলাই-আগস্টের ঘটনায় কিছু অস্ত্র এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি এবং তাবলিগ জামাতের দুই গ্রুপের বিভিন্ন সময় সংঘর্ষের ঘটনা মাথায় রেখে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হয়েছে। ইজতেমা ময়দান সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখার জন্য ময়দানে ১৬টা ওয়াচ টাওয়ার, সাড়ে তিনশ সিসিটিভি ক্যামেরা, সাড়ে সাত হাজার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য ছাড়াও সাদা পোশাকে অভ্যন্তরে দায়িত্ব পালন করবেন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি নিরাপত্তা ব্যবস্থায় তাবলিগ জামাতের পক্ষ থেকে অন্তত ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত থাকবে।
টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরে ১৬০ একর জমিজুড়ে ইজতেমা ময়দান বিশ্ব ইজতেমার জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত করা হয়েছে। আগামী শুক্রবার ফজরের নামাজের পর থেকেই আম বয়ানের মাধ্যমে বিশ্ব ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। এবারে বিশ্ব ইজতেমা দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হলেও প্রথম পর্বটি দুই ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম পর্বে প্রথম ধাপে ৩১ জানুয়ারি থেকে ২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত শুরায়ে নেজামি অনুসারী ঢাকার আংশিক এলাকাসহ দেশের ৪১ জেলার তাবলিগ জামাতের মুসল্লিরা অংশ নেবেন। আর দ্বিতীয় ধাপে ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সূরা নেজামি ঢাকার বাকি এলাকাসহ দেশের অন্য ২২ জেলার তাবলিগ জামাতের মুসল্লিরা অংশ নেবেন।
আর দ্বিতীয় পর্ব মাওলানা সাদের অনুসারী তাবলিগ জামাতের মুসল্লিদের বিশ্ব ইজতেমা ১৪, ১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।
এরই মধ্যে বিশ্ব ইজতেমার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ময়দানে আসতে শুরু করেছেন মুসল্লিরা। ভোর থেকেই দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত মুসল্লি এবং তাবলিগ জামাতের নেতারা তাদের ক্ষিত্তা অনুযায়ী ময়দানে অবস্থান নেওয়া শুরু করেছেন।
ময়দানে অবস্থান নেওয়া মুসল্লিরা জানান, দ্বীনের দাওয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালাকে রাজি-খুশি করে এবং দ্বীন ইসলামের প্রতি মেহনত করে আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনই তাঁদের চাওয়া-পাওয়া।
শুরায়ে নেজামির মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান জানান, এ বছর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি অন্তত ১০ হাজার তাবলিগ জামাতের সাথী নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নিয়োজিত করা হয়েছে। তারা সার্বক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহায়তা করবেন। প্রতি খিত্তায় আলাদা তদারকির ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাওলানা সাদের অনুসারীদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা মাথায় রেখে তাবলিগ জামাতের শুরায়ে নেজামির পক্ষ থেকেও সার্বিক ব্যবস্থাপনা জোরদার করা হয়েছে।
বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে মুসল্লিদের নিরাপত্তায় পুলিশ, র্যাব, আনসারের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও বিজিবি টহলে থাকবে। মুসল্লিদের নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন স্তরে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে। তাবলীগের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এবং বিভিন্ন সময়ে ঘটে যাওয়া ঘটনা মাথায় রেখেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে বলে জানান গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ড. মোহাম্মদ নাজমুল করিম খান।
৩১ জানুয়ারি বিশ্ব ইজস্তেমার প্রথম পর্ব শুরু হলেও আগামীকাল ৩০ জানুয়ারি থেকে মুসল্লিদের ব্যাপক উপস্থিতির কারণে থেমে থেমে চলবে আম বয়ান এবং ২ ফেব্রুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের প্রথম ধাপ। এরপর ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত হবে প্রথম পর্বের দ্বিতীয় ধাপ।