ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভোগান্তির শেষ নেই!
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/01/31/bhairab_1.jpg)
ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কাঙ্ক্ষিত স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছেন না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রোগীরা। তারা বলছেন, কাঙ্ক্ষিত সেবা না পেয়ে তাদেরকে বাধ্য হয়ে বেসরকারি হাসপাতালের দিকে ঝুঁকতে হচ্ছে। এতে গুনতে হচ্ছে অনেক টাকা।
৩১ শয্যার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিকে বিগত জোট সরকারের আমলে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। সেটিকে গত দুই বছর আগে ১০০ শয্যায় উন্নীত করার লক্ষ্যে ৩১ কোটি টাকা ব্যয়ে ভবন নির্মাণ করা হয়। নির্মাণ কাজ শেষে সাবেক সংসদ সদস্য ও বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান পাপন ১০০ শয্যা হিসেবে ঘোষণাও করেন আনুষ্ঠানিকভাবে। কিন্তু দীর্ঘ দুই বছরেও প্রশাসনিক অনুমোদন না পাওয়ায় এবং জনবল সংকট দূর না হওয়ায় রোগীরা কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এই হাসপাতালটিতে প্রতিদিন শত শত রোগী সেবা নিতে ভিড় করেন। শহরের বাসিন্দাদের পাশাপাশি উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন এবং আশপাশের কয়েকটি উপজেলা থেকে রোগীরা এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন। তবে হাসপাতালের বর্তমান জনবল ও অবকাঠামো সীমাবদ্ধতায় সেবা প্রদানে ব্যর্থ হচ্ছে কর্তৃপক্ষ।
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/very_big_1/public/images/2025/01/31/bhairab_2.jpg)
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, এখানে ২৭ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও ১৩টি পদ শূন্য। এর সঙ্গে ছুটি, বদলি ও প্রশিক্ষণের কারণে আরও কয়েকজন চিকিৎসক অনুপস্থিত থাকায় বর্তমানে মাত্র ছয়জন চিকিৎসক কাজ করছেন। এতে চিকিৎসকেরাও হিমশিম খাচ্ছেন।
টেকনিশিয়ান সংকট, পরীক্ষার সরঞ্জামের যেমন—রিএজেন্ট, এক্স-রে ফিল্ম, আলট্রাসনোগ্রাম ও ইসিজি পেপার না থাকায় রোগীদের বাধ্য হয়ে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ওপর নির্ভর করতে বাধ্য হচ্ছে। এতে তাদের চিকিৎসা খরচ বেড়ে যাচ্ছে।
হাসপাতালে আসা হামিদা বেগম ও আকবর মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ‘চিকিৎসক কম। যারা আছেন তারাও কয়েকজন ছুটিতে, আবার কেউ সময়মতো হাসপাতালে আসেন না। চিকিৎসক কম এবং রোগীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হয়। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।’
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/very_big_1/public/images/2025/01/31/bhairab_3.jpg)
চিকিৎসা নিতে আসা লাইলী বেগম (৪২) বলেন, ‘হাসপাতালে কোনো প্রয়োজনীয় ওষুধ পাওয়া যায় না। বাইরের দোকান থেকে কিনতে হয়। অথচ সরকারি হাসপাতালে এসব ওষুধ বিনামূল্যে পাওয়ার কথা।’
জাহিদুল ইসলাম ও হোসনে আরা বেগম নামে আরও দুই রোগী বলেন, হাসপাতাল থেকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যায় না। আমাদের মতো গরিব মানুষ চিকিৎসার জন্য এখানে এসে সেবা পাচ্ছি না।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. বুলবুল আহম্মেদ বলেন, ‘আমরা চিকিৎসা দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। তবে জনবল সংকট ও সরঞ্জামের অভাবে পুরোপুরি সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। দ্রুত এই সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেওয়া হয়েছে।’