নির্বাচনের তারিখ ঘোষণায় গড়িমসি স্বাভাবিক নয় : রিজভী
অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে গড়িমসি করা কোনো স্বাভাবিক বিষয় নয় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
আজ রোববার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে অমর একুশে বইমেলায় জিয়া স্মৃতি পাঠাগার ও জিয়া পরিষদের বইমেলার স্টল উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উদ্দেশে রুহুল কবির রিজভী বলেন, সংস্কার হলো চলমান প্রক্রিয়া। এই সংস্কারের জন্য সবকিছু আটকে রাখা এটা জনগণ কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না। যারা রাজনীতি পর্যালোচনা করেন, পর্যবেক্ষণ করেন, পৃথিবীর বিভিন্ন ইতিহাস থেকে তাদের কাছেও এটা কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না।
রিজভী আরও বলেন, প্রয়োজনীয় সংস্কারের কথা তো আমরা সবাই বলেছি। কিন্তু সংস্কারের কথা আপনারা বারবার উচ্চারণ করে গণতন্ত্রের পথকে আটকে রাখবেন এটা মানুষ স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করবে না। একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে এই যে গড়িমসি করা, আমার কাছে মনে হয় এটাও কোনো স্বাভাবিক বিষয় নয়। জনগণকে অবশ্যই জানাতে হবে নির্বাচন কবে হবে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, অনেকেই বলেছেন যে নির্বাচনের জন্যই কি বিপ্লব হয়েছে, বিপ্লব তো হয় একটা ক্রজের উপর ভিত্তি করে। মানুষ ১৬-১৭ বছর ভোট দিতে পারেনি, ১৭ বছর মানুষ তার নিজের চিন্তা অনুযায়ী সরকার পরিবর্তন করতে পারেনি। অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন এবং জনগণ ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারার যে অধিকার সেই অধিকারকে হরণ করা হয়েছিল। এটা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা অন্যতম গণতন্ত্রের শর্ত।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, আজকে আমরা যতটুকুই স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পারছি, যতটুকুই আলো বাতাস পাচ্ছি এটির পরিধি আরও বিস্তর করতে হবে। সামনে আমাদের যে কাজগুলো বাকি রয়েছে সেগুলোকে নিশ্চিত করতে হবে। আমরা গণতন্ত্রের পথে হাঁটার পরিবেশ পেয়েছি, কিন্তু পরিপূর্ণ গণতন্ত্র আমরা এখনও পাইনি। মানুষ তার মালিকানা এখনও ফিরে পায়নি। অর্থাৎ জনগণ যে তার সরকার গঠন করবে তার যে ক্ষমতা সেই ক্ষমতা এখনও নিশ্চিত হয়নি। অবাধ, সুষ্ঠু, ইনক্লুসিভ নির্বাচন যেদিন নিশ্চিত হবে সেই দিন গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় উপাদান নিশ্চিত করা যাবে এবং জনগণ তার মালিকানা ফেরত পেয়ে গণতন্ত্রের পূর্ণ বিকাশের পথে এই জাতি হাঁটতে পারবে।
রিজভী বলেন, সত্যিকার অর্থে যদি গণতান্ত্রিক পরিবেশ থাকে তখনই সবকিছু বিকাশ লাভ করে, এগিয়ে যাওয়ার একটা পরিবেশ তৈরি হয়। আর সেটা যদি অবরুদ্ধ থাকে তাহলে তো কোনো কিছুরই বিকাশ হবে না। হুমায়ূন আহমেদ একটি বই লিখেছিলেন। সেই বইয়ের লেখা পরিবর্তন করার জন্য হাইকোর্ট থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। তাহলে কি আমল ছিল গত ১৬-১৭ বছর?
বই পাঠ করা এবং জ্ঞানভিত্তিক সমাজ তৈরি করা এটা অত্যন্ত জরুরি।গণতান্ত্রিক সমাজের পূর্ব ভিত্তি হচ্ছে জ্ঞানভিত্তিক সমাজ।
এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালামসহ জিয়া স্মৃতি পাঠাগার এবং জিয়া পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।