ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে নিহত ৩ জনের বাড়ি গোপালগঞ্জ
অবৈধভাবে সমুদ্রপথে লিবিয়া থেকে ইতালি যাওয়ার সময় ভূমধ্যসাগরে নৌকাডুবিতে বাংলাদেশের নিহত ২৩ জনের মধ্যে তিনজনের বাড়ি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে। মৃত্যুর খবর নিশ্চিত হওয়ার পর থেকে নিহতদের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। এ ছাড়াও সাইফুল ব্যাপারী নামে গোপালগঞ্জের আরও এক যুবকের খোঁজ পাচ্ছে না পরিবার।
নিহতরা হলেন—মুকসুদপুর উপজেলার রাঘদী ইউনিয়নের চরপ্রসন্নদী গ্রামের মেহেদী শেখের ছেলে আরাফসান ইসলাম আশিক (১৮), একই গ্রামের ওহাব খন্দকারের ছেলে সাত্তার খন্দকার (৪০) ও মোল্লাদী গ্রামের আব্দুল মজিদ শেখের ছেলে রফিকুল শেখ (২৫)।
রফিকুলের চাচা মো. জয়নাল শেখ জানান, স্বপ্ন পূরণ করতে ইতালি যাওয়ার জন্য নিজের ভিটে-বাড়ি সব বিক্রি করে ২০ লাখ টাকা দিয়েছিল। বাবা-মাহীন জয়নালের বড় এক ভাই ছাড়া পরিবারে আর কেউ নেই।
নিহত আশিকের বাবা মেহেদী শেখ জানান, ছেলেকে ইতালি পাঠানোর জন্য লোন করে ও আত্মীয়ের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ১৭ লাখ টাকা দেয় পাশের শ্রীজিতপুর গ্রামের লোকমান হাওলাদারের ছেলে দালাল বাবু হাওলাদারকে। লিবিয়া যাওয়ার পর তিন বা চারবার কথা হয়। আমি দালাল বাবু হাওলাদারের শাস্তি চাই।
ছাত্তার খন্দকারের স্ত্রী লাবনী খন্দকার জানান, লিবিয়া পৌঁছানোর পর আমার কাছ থেকে তিন দফা টাকা নিয়েছে। ২৪ লাখ টাকা নেওয়ার কথা থাকলেও টাকা নিয়েছে ২৬ লাখ।
নিহতদের পরিবারগুলো দ্রুত মরদেহ ফেরত পাওয়ার জন্য সরকারি হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। পাশাপাশি দালালদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন তারা।
মুকসুদপুরের নিহতদের বিষয়ে মুকসুদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তফা কামাল জানান, বিষয়টি জানতে পেরেছি। তাদের তালিকা প্রণয়নের কাজ চলছে। আমাদের কাছে এখনো কোনো অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে দালালদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অপরদিকে মুকসুদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাসনিম আক্তার জানান, তিনজনের মৃত্যুর খবর আমরা জানতে পেরেছি। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে তালিকা প্রণয়ন করা হচ্ছে।