তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়নে ভারতের সঙ্গে মাথা উঁচু করে কথা বলবে সরকার : আসিফ মাহমুদ
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, ‘বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়নে বিগত সরকারের মতো নতজানু হয়ে নয়, পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে ভারতের সঙ্গে মাথা উঁচু করে কথা বলবে।’
আজ রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) জেলার কাউনিয়া উপজেলার তিস্তা রেলব্রিজ সংলগ্ন মাঠে স্থানীয় জনগণের সঙ্গে ‘তিস্তা নদীর পানির হিস্যা নিয়ে করণীয়’ শীর্ষক গণশুনানিতে এসব কথা বলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গণশুনানিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
এ ছাড়া শুনানিতে স্থানীয় সরকার বিভাগ ও পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকতা এবং রংপুরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, প্রয়োজনে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে ভারতকে আন্তর্জাতিকভাবে চাপ প্রয়োগ করা হবে।
উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, “আপনারা কেমন আছেন, জিজ্ঞাসা করব না, জানি আপনারা ভালো নেই। উত্তরবঙ্গের যেখানেই গিয়েছি সবার একটাই দাবি, ‘রিলিফ চাই না, তিস্তায় পানি চাই’। তিস্তা মহাপরিকল্পনা অন্তর্বর্তী সরকারের সময়ে চূড়ান্ত হবে।”
উত্তরবঙ্গের অন্যান্য উন্নয়ন কার্যক্রম প্রসঙ্গে স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেন, তিস্তার চরে জনসংখ্যা অনুপাতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নির্মাণের ব্যবস্থা করবে সরকার। উত্তরবঙ্গের কৃষিজ পণ্য সংরক্ষণের জন্য বিভিন্ন স্থানে কোল্ড-স্টোরেজ নির্মাণ করার পাশাপাশি কৃষিজ শিল্পের বিকাশের জন্য চিনিকলগুলো চালু করা হচ্ছে।
পীরগাছা থেকে চিলমারীর অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বাড়াতে তিস্তার ওপরে ১ হাজার ৪০০ মিটার ব্রিজের সার্ভে করা হয়েছে এবং বর্তমান সরকারের আমলেই তা উদ্বোধন করা হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা।
ইতোমধ্যে শিক্ষার হার বৃদ্ধিতে উপজেলাভিত্তিক আধুনিক লাইব্রেরি এবং উন্নয়ন কাজের জন্য বিশেষ বরাদ্দের ঘোষণা করা হয়েছে বলেও জানান উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘তিস্তা আন্তর্জাতিক নদী হওয়ায় এই নদীর ওপর কোনো দেশের একক অধিকার নাই। তিস্তার বাঁধ খুলে দেওয়ার আগে ভারতের উচিত আমাদেরকে অবশ্যই অবগত করা।’
চীনের সঙ্গে তিস্তা মহাপরিকল্পনা ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে চূড়ান্ত হবে বলে উল্লেখ করে উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান বলেন, তিস্তার ভাঙন রোধে আগামী সপ্তাহে শুরু হবে ৪৫ কিলোমিটার তীর-রক্ষা কাজ।
গণশুনানিতে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকার জনসাধারণ তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন, তিস্তার পানির সুষম বণ্টন, তিস্তার সঙ্গে শাখা নদীগুলোর সংযোগ করা, তিস্তার পানির ন্যায্যতায় ভারতের সঙ্গে শক্ত অবস্থান, বন্যা-খরায় পূর্ব প্রস্তুতি গ্রহণ, তিস্তার দুই পাড়ে শক্তিশালী বাঁধ নির্মাণসহ আরও নানা দাবি তুলে ধরেন।