শ্রীপুরে অন্তঃসত্ত্বা নারীকে যুবলীগনেতার মারধর, নবজাতকের মৃত্যু
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/02/13/sripur.jpg)
গাজীপুরের শ্রীপুরে সাড়ে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা নারীকে এক যুবলীগ নেতা মারধর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। হাসপাতালে ওই নারীর সিজারিয়ান অপারেশনে জন্ম নেওয়া নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে গত মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি)।
ভুক্তভোগী অন্তঃসত্ত্বা নারী মিম আক্তারের বাড়ি গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের উত্তর পেলাইদ গ্রামে। তিনি দিনমজুর মো. মাজাহারুল ইসলামের স্ত্রী। অভিযোগ ওঠা যুবলীগ নেতা রফিকুল ইসলামের (৫০) বাড়িও একই গ্রামে। তিনি তেলিহাটি ইউনিয়ন আওয়ামী যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
ভুক্তভোগী মিম আক্তার কেঁদে কেঁদে বলেন, ‘তারা আমার সন্তানকে বেঁচে থাকতে দিল না। আমি সন্তান হত্যার বিচার চাই। আমরা গরিব শ্রমিক বলে কি বিচার পাব না? তিন-চারটা মার্ডার করলেও নাকি ওদের কিছু হবে না। আমি আমার সন্তান হত্যার বিচার চাই।’
মিম আক্তার জানান, জমি নিয়ে বিরোধের জেরে চাচা শ্বশুর রফিকুল ইসলামসহ কয়েকজন তার স্বামীকে মারধর করছিল। এ সময় স্বামীকে রক্ষা করতে এগিয়ে গেলে তার পেটে কয়েকটি লাথি মারা হয়। মুহূর্তের মধ্যেই প্রচুর রক্তক্ষরণ শুরু হলে জ্ঞান হারিয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। পরে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে তাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অস্ত্রপাচারের মাধ্যমে নবজাতককে ভূমিষ্ঠ করতে বাধ্য হন চিকিৎসকেরা। তবে দুদিন পর হাসপাতালের এনআইসিইউতে চিকিৎসাধীন শিশুটির মৃত্যু হয়। এমন মৃত্যু কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছে না পরিবার।
নবজাতকের বাবা দিনমজুর মাজাহারুল ইসলাম বলেন, ‘গত এক সপ্তাহ আগে বাড়ির পাশের জমি জবরদখল করার চেষ্টা করেন রফিকুল ইসলাম। বাধা দিতে গেলে আমাকে মারধর করে। এ সময় আমার স্ত্রী রক্ষা করতে গেলে তাকেও মারধর করে। মারধরের কিছুক্ষণ পর থেকেই রক্তক্ষরণ শুরু হয়। চিকিৎসক সিজারিয়ান অপারেশন করেন। দুদিন পর গত মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) রাতে আমার নবজাতক শিশু মারা যায়।’
স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালে এলাকায় রফিকুল ইসলাম ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিলেন। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ নিকটাত্মীয় থেকে শুরু করে প্রতিবেশীও। গত কিছুদিন আগেও তিনি এক নারীর মাথা ফাটিয়েছেন। নবজাতকের মৃত্যুর পর থেকে হামলায় জড়িত রফিকুল ইসলাম গা ঢাকা দিয়েছেন।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে অভিযোগ অস্বীকার করে রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘জমি জবরদখলে নিতে পরিকল্পিতভাবে আমার ওপর মিথ্যা অপবাদ দেওয়া হচ্ছে।’
শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুরুজ্জামান বলেন, নবজাতকরের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় পরবর্তী আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।