সুগন্ধি মরিচ চাষে বাজিমাত মেহেদীর, বছরে আয় সাড়ে তিন লাখ
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/02/14/mric_caasse_baajimaat_chbi.jpg)
পটুয়াখালীর বাউফলের মদনপুরা ইউনিয়নের চন্দ্রপাড়া গ্রামের ২৫ বছর বয়সী শিক্ষিত যুবক মেহেদী হাসান। ২০২১ সালে তিনি বাউফল সরকারি কলেজ থেকে ডিগ্রি পাস করেন। তার সহপাঠিরা যখন চাকরির পিছনে ছুটতে শুরু করে, মেহেদী তখন পেশা হিসেবে বেছে নেন কৃষি কাজ। তার পৈত্রিক ৬ শতক জমিতে শুরু করেন বোম্বাই মরিচ চাষ। আর এতে প্রথম বছরেই বাজিমাত করেছেন মেহিদী। তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। বোম্বাই মরিচ থেকে এখন তার বছরে আয় প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা। উপজেলার সীমানা পেরিয়ে তার সুগন্ধি মরিচের সুনাম ছড়িয়ে পাশের উপজেলাগুলোতেও। মেহেদী এখন একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা। তার এমন সফলতায় খুশি স্থানীয় কৃষি বিভাগও।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে চন্দ্রপাড়া গ্রামে মেহেদীর মরিচ বাগান ঘুরে দেখা যায়, সারা বছর মরিচ চাষের জন্য বিশেষ পদ্ধতিতে পলিথিনের শেড নির্মাণ করা হয়েছে। শেডে সারিবদ্ধভাবে লাগানো হয়েছে মরিচ গাছ। গাছে থোকায় থোকায় রয়েছে কাঁচা-পাকা মরিচ। এসব মরিচ গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন মেহেদী।
আলাপচারিতায় মেহেদী হাসান বলেন, ‘চাকরির জন্য টাকা প্রয়োজন। টাকা ছাড়া কোনো চাকরি হয় না। একারণে চাকরির পিছনে না দৌঁড়ে বাবার অল্প জমিতে কৃষি কাজ শুরু করি। প্রথমে সুগন্ধি ঘৃতকুমারী জাতের বোম্বাই মরিচ চারা রোপণ করি। কৃষি অফিসের লোকজন সহায়তা করে। তাদের পরামর্শ মতো পরিচর্যা করে ভালো লাভবান হই। প্রথমে বাজার থেকে উন্নত জাতের বোম্বাই মরিচের বীজ কিনে চাষ করি। পরে নিজের গাছের উৎকৃষ্ট ফল থেকে বীজ সংগ্রহ করে রাখি। পরে সেই বীজ থেকে চারা উৎপান্ন করি। এ চারা নিজে রোপণ করি। বাইরেও বিক্রি করি। একই সাথে মরিচ চাষের জমি বাড়াতে থাকি।’
মেহেদী হাসান জানান, গত মৌসুমে ২৪৭টি চারা রোপণ করেন। এতে ৫০ হাজার টাকার মত খরচ হয়। মরিচ বিক্রি করেন প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকার। চলতি মৌসুমে ফলন ভালো হওয়ায় লাভের পরিমাণ আরও বাড়বে বলে আশা করেছেন তিনি।
এনটিভি অনলাইনকে মেহেদী হাসান বলেন, ‘আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। বাবা কৃষক ছিলেন। ছোট বেলা থেকে শুনে আসছি ঘুষ ছাড়া চাকরি হয় না। ঘুষ দেওয়া বা নেওয়া আমার অপছন্দ। তাই বাবার কৃষি পেশাই আমার পেশা হিসেবে বেছে নিই। আল্লাহর রহমাতে আমি সফল হয়েছি। বোম্বাই মরিচের পাশাপাশি বিভিন্ন সবজি, ফল, ফুলের চারা উৎপাদন করে তা বিক্রি করি। প্রতিমাসে সবমিলিয়ে আয় এক লাখ টাকার বেশি।’
এবিষয়ে বাউফল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মিলন বলেন, মেদেহী হাসান একজন সফল কৃষি উদ্যোক্তা। তাকে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সহায়তা এবং প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আগামী দিনেও কৃষি বিভাগ তার পাশে থাকবে। আমরা চাই কৃষি পেশায় এ ধরনের শিক্ষিত যুবকেরা এগিয়ে আসুক।