আ.লীগের রাজনৈতিক ফয়সালা বাংলার মাটিতে করতে হবে : নাহিদ ইসলাম

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, বিচারিক কার্যক্রমের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ফয়সালা বাংলার মাটিতে করতে হবে। আমরা জুলাই গণহত্যার বিচার দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকর দেখতে চাই।
আজ মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সকাল ৮টায় সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে মহান মুক্তিযুদ্ধের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পর তিনি এসব কথা বলেন।
এর আগে, এদিন সকাল সাড়ে ৭ টায় জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক মো. নাহিদ ইসলাম ও সদস্যসচিব আখতার হোসেনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা একে একে প্রবেশ করেন জাতীয় স্মৃতিসৌধে।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মো. নাহিদ ইসলাম বলেন, দলের প্রথম কর্মসূচি হিসেবে আজ আমরা জাতীয় স্মৃতিসৌধে স্বাধীনতা সংগ্রামের বীর শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জ্ঞাপন করেছি। আজ থেকে শুরু হলো আমাদের আনুষ্ঠানিক কর্মসূচি। দেশের মানুষদের আমরা শুভেচ্ছা জানাই। এই ভূখণ্ডের মানুষের লড়াইয়ের যে ইতিহাস রয়েছে, ১৯৪৭ সালের আজাদীর লড়াই থেকে শুরু করে ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং ২০১৪ সালের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান - এই সকল লড়াইয়ের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করেই আমরা নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করব।
সেকেন্ড রিপাবলিক প্রতিষ্ঠার প্রত্যয় ব্যক্ত করে জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক আরও বলেন, ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আমরা একটি স্বাধীন ভূখণ্ড পেলেও আমাদের সার্বভৌমত্ব বারবার হুমকির মুখে পড়েছে। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ভেঙে পড়েছে। আমরা গণতান্ত্রিক সংবিধান গড়ে তুলতে পারিনি। একদলীয় সংবিধানের মাধ্যমে ফ্যাসিজম এবং স্বৈরাচারীর বীজ বপন করা হয়েছিল। আমরা বলেছি, একটি নতুন প্রজাতন্ত্র করতে হবে। তার জন্য নতুন সংবিধান এবং গণপরিষদ নির্বাচন প্রয়োজন। এ জন্যই আমরা সেকেন্ড রিপাবলিকের কথা বলেছি এবং সেই লক্ষ্যেই কাজ করে যাচ্ছি।
মো. নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা রায়েরবাজার বদ্ধভূমিতে যাব। সেখানে ৭১ এবং জুলাই শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করব। তাদের আত্মত্যাগকে স্মরণ করেই আমরা আমাদের যাত্রা সূচনা করছি। আমাদের প্রথম লক্ষ্য হলো তৃণমূলে সাংগঠনিক কার্যক্রমকে বিস্তৃত করা। রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন পেতে যেসব শর্তাবলি রয়েছে, তা দ্রুততম সময়ের মধ্যে পূরণ করা। আশা করছি আমরা এ মাসের মধ্যে গঠনতন্ত্র প্রণয়নের কাজ শুরু করব।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক বলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াগুলোকে বারবার দীর্ঘায়িত করা হয়েছে। ২৪ এর গণঅভ্যুত্থান যাতে ব্যর্থ না হয় সেটা মাথায় রেখে আমরা পুরোনো সংবিধান এবং পুরোনো শাসন কাঠামো পরিবর্তনের কথা বলছি। সেটা পরিবর্তন না হলে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ সম্ভব নয়। আমরা কেবল সরকার পরিবর্তন নয়, পুরো সাংবিধানিক কাঠামো পরিবর্তন করে নতুন একটি বাংলাদেশের যাত্রা শুরু করতে চাই। যেখানে প্রকৃত গণতন্ত্র, ইনসাফ ও সাম্য নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।
এ সময় জাতীয় নাগরিক পার্টির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, প্রিয় দেশবাসী, আমরা এক ঐতিহাসিক পরিস্থিতিতে আজ একত্রিত হয়েছি। আমরা স্থানীয় এবং জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ভাবছি। অনেকেই আমাদের ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ স্লোগান নিয়ে আলোচনা করছেন। বাংলাদেশের জনগণ এক সময় আকাশে এই স্লোগান লিখে দিবে ইনশাল্লাহ।
প্রসঙ্গত, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে সমাবেশের মধ্য দিয়ে নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে জাতীয় নাগরিক পার্টি। পরে ২১৭ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয় দলটি।