নির্মাণের ১৫ বছরেও সেতুতে উঠতে পারেননি এলাকাবাসী

সেতু নির্মাণের প্রায় ১৫ বছর পেরিয়ে গেলেও এতে উঠতে পারেননি এলাকাবাসী। কিশোরগঞ্জের হাওর উপজেলা অষ্টগ্রামের কলমা ইউনিয়নের মোহনতলা বাজারের পাশের এ সেতুতে সংযোগ সড়ক নেই। এতে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন স্থানীয়রা।
গতকাল বুধবার (৫ মার্চ) সরেজমিনে দেখা যায়, মোহনতলা বাজারের সামনে বাজুরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও মোহনতলা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঝামাঝি এলাকায় একটি সেতু নির্মাণ করা হয়েছে। এটির দুই প্রান্তে নেই সংযোগ সড়ক। ফলে সেতুটি নির্মাণ হওয়ার পর থেকে ব্যবহার করত পারেনি এলাকাবাসী।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, এই সেতুটি এলাকার কোনো উপকারেই আসেনি, বরং দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেতুটি নির্মাণকালে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজনকে একাধিকবার সংযোগ সড়কের কথা বললেও তারা কর্ণপাত করেননি। সেতু থাকা সত্বেও বর্ষাকালে যাতায়াতের সুবিধার্থে গ্রামবাসী মিলিতভাবে চাঁদা তুলে স্কুলে ও বাজারে যাতায়াতের জন্য প্রতিবছর দেড় থেকে দুই লাখ টাকা ব্যয়ে বাঁশের সাঁকো নির্মাণ করেন বলেও জানান স্থানীয় কয়েকজন।
সাপান্তর এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা দেবেন্দো বলেন, এই সেতুটি প্রায় ১৪ থেকে ১৫ বছর আগে বানানো হয়েছে, কিন্তু আজ পর্যন্ত গ্ৰামবাসী ব্যবহার করতে পারেনি। এই সেতুর দুই পাশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে। শত শত শিক্ষার্থী বর্ষাকালে অনেক কষ্টে চলাচল করে। সেতুর দুই পাশে মাটি ভরাট করে দিলে গ্ৰামবাসী উপকৃত হবে।
মোহনতলা বাজারের ব্যবসায়ী প্রীতি রঞ্জন দাস বলেন, এলাকাবাসীর সুবিধার জন্য সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে, কিন্তু এখন এটা ব্যবহার হচ্ছে না, শুধু দেখে দেখে বছরের পর বছর সময় যাচ্ছে। এমন একটা সেতু তৈরি হয়েছে যার দুই পাশে মাটি নাই, সংযোগ নাই। কীভাবে ব্যবহার করবে মানুষ? বর্ষাকাল এলে বাঁশের সাঁকো তৈরি করে বাজারে আসা যাওয়া করে, অথচ লাখ লাখ টাকা খরচ করে বানানো পাকা সেতু পড়ে আছে।
অষ্টগ্রাম উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ত্রাণ ও দূর্যোগ ব্যবস্থপনা মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে প্রায় ১৫ বছর আগে ২৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৯ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটি নির্মাণ করা হয়। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রিয়াঙ্কা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী বিশ্বম্ভর সাহা সেতুর কাজ করেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগে সেতুর দুই পাশের মাটি সরে গেলে আর কোনোদিন এইখানে মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়নি, যার ফলে ২৩ লাখ টাকার সেতু অকেজো হয়ে পড়ে রয়েছে।
সেতুটির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স প্রিয়াঙ্কা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী বিশ্বম্ভর সাহাকে যোগাযোগের জন্য পাওয়া যায়নি।
অষ্টগ্রাম উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মজনু মিয়া বলেন, ‘আমি এখানে আসার অনেক আগেই সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। শুনেছি, এখানে বর্ষায় খালে প্রচণ্ড স্রোত থাকার কারণে সংযোগ সড়কে মাটি থাকে না। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।’