আম প্রতীক নিয়ে ইসির শুনানি শেষ, পর্যালোচনা শেষে সিদ্ধান্ত নেবে ইসি

নির্বাচনি প্রতীক ‘আম’ নিয়ে দ্বন্দ্ব সমাধানে আবারও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) শরণাপন্ন হয়েছে ন্যাশনাল পিপলস পার্টির (এনপিপি) দুই অংশ। তিন দিনের ব্যবধানে দুই পক্ষের সঙ্গে প্রতীক নিয়ে শুনানি করেছে ইসি। ফলে প্রতীক কারা বরাদ্দ পাচ্ছেন তা জানা যাবে ইসি সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর।
আজ রোববার (৯ মার্চ) বিকেল তিনটায় নির্বাচন কমিশনের সচিব আখতার আহমেদ এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য জানিয়ে বলেন, শুনানি শেষ করলাম। আমরা সবকিছু পর্যালোচনা করছি। পর্যালোচনা শেষে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। এখনও সিদ্ধান্ত নিইনি।
আজ রোববার এনপিপির একাংশের চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ ইসির শুনানিতে অংশ নেন। শুনানি শেষে তিনি বলেন, আমরা দরখাস্ত করেছিলাম আমাদের আম প্রতীক ফিরিয়ে দিতে। আমরা ন্যায়বিচার চাই। সেই ন্যায়বিচারের জন্য আজকে শুনানি হয়েছে। আমরা কোর্টে দরখাস্ত করেছিলাম সেটার অর্ডার এসেছে যে এটাকে ন্যায়বিচার সঙ্গত করে আমাদের জানান। শুনানি খুব সৌহার্দ্যপূর্ণ হয়েছে। কমিশনার খুব ধৈর্য ধরে শুনেছেন এবং বলেছেন আমাদের দাবি বাস্তবসম্মত। তারা ন্যাবিচার করবেন বলে জানিয়েছেন।
২০০৭ সালে জাতীয় পার্টির সাবেক নেতা শওকত হোসেন নিলুর নেতৃত্বে গঠিত হয় এনপিপি। ওই সময় দলের মহাসচিব হিসেবে দায়িত্ব পান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ। পরের বছর দলটি আম প্রতীকে ইসির নিবন্ধন পায়।
২০১৪ সালের ১৬ আগস্ট দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ফরিদুজ্জামান ফরহাদকে মহাসচিব পদ থেকে বহিষ্কার করে দলটি। ওই সময় থেকেই দলটি দুই অংশ বিভক্ত হয়ে পড়ে। এর মধ্যে একটি অংশ ২০ দলীয় জোটে রয়েছে এবং আরেকটি অংশে নেতৃত্বে গঠিত হয় এনডিএ জোট।
বিভক্তির পর ২০১৫ সালে ‘আম’প্রতীকটি নিজেদের বলে দাবি করে ইসিতে আবেদন করেন ফরহাদ। পরে ২০১৬ সালের মে মাসে শুনানি করে নিলুর হাতেই ‘আম’প্রতীক তুলে দেয় ইসি। ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর সম্প্রতি আবারও প্রতীক নিজেদের দাবি করে আবেদন জমা দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে উভয় অংশের সঙ্গে প্রতীক নিয়ে শুনানির আয়োজন করে ইসি।
আজ শুনানি শেষে একাংশের চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, আজকে আমাদের শুনানি ছিল। ২০০৭ সালে আমাদের দল গঠন হয় ন্যাশনাল পিপলস পার্টি। ২০০৮ সালে আমরা আম মার্কায় নিবন্ধন পাই। এনপিপির চেয়ারম্যান শওকত হোসেন নীলু সাহেব শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট সরকারে থাকার কারণে আমরা তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে দিয়েছিলাম। তখনকার নির্বাচন কমিশনার আমাদের আম প্রতীক না দিয়ে নীলু সাহেবকে দিয়েছিল। সেটার প্রতিবাদে আমরা দরখাস্ত করেছিলাম আমাদের আম প্রতীক ফিরিয়ে দিতে।
এনপিপির অন্য অংশের দাবি, আপনাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে- এমন দাবির প্রেক্ষিতে ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, ‘কথার পাল্টা কথা তো থাকবেই। যেমন শেখ হাসিনা বলেছিলেন, দেশে গণতন্ত্র, বাকস্বাধীনতা আছে। সবকিছু আছে। সবকিছু থাকলে শেখ হাসিনাকে কেন দেশ থেকে পালাতে হলো। পাল্টা কথা তো থাকবেই। আমিই তাকে (নীলু) বহিষ্কার করেছিলাম। দলের ১৪ জন সভাপতিমণ্ডলীর সম্মতিক্রমে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ইসির ডাকে শুনানিতে অংশ নেন এনপিপির অন্য অংশের চেয়ারম্যান সালাউদ্দিন ছালু। শুনানি শেষে তিনি বলেন, ইসির ওয়েবসাইটে চেয়ারম্যান হিসেবে এখনো আমার নামই আছে। কমিশন বলেছে, তারা (এনপিপি) অন্য অংশ) তো একটি আবেদন দিয়েছে। এটি খন্ডন করে আমাকে একটি চিঠি দিতে বলেছে ইসি।