ব্যবসায়ী গোলাম মর্তুজার মুক্তির দাবিতে পরিবারের সংবাদ সম্মেলন

ছাত্র হত্যার দায়ে মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় গ্রেপ্তার করা ব্যবসায়ী প্রকৌশলী এস এম গোলাম মর্তুজার অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেছে তার পরিবার। মঙ্গলবার (১১ মার্চ) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে গোলাম মর্তুজার স্ত্রী প্রিন্সিপাল নাদিরা মর্তুজা লিখিত বক্তব্যে এ দাবি করেন।
প্রিন্সিপাল নাদিরা মর্তুজা লিখিত বলেন, একটি কুচক্রীমহল ব্যবসায়ী প্রকৌশলী এস এম গোলাম মর্তুজার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে ক্ষান্ত হয়নি, গ্রেপ্তার পরবর্তী সময়েও পরিবারকে সন্ত্রাসী দ্বারা হুমকি দিয়ে আসছে।
গোলাম মর্তুজা কখনো ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না দাবি করে প্রিন্সিপাল নাদিরা মর্তুজা লিখিত বলেন, বরং জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের সময় তিনি ছাত্র-জনতার আন্দোলনের অংশ নিয়েছিলেন এবং সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন।
প্রিন্সিপাল নাদিরা মর্তুজা লিখিত বলেন, ‘যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে মিথ্যা মামলা থেকে গোলাম মর্তুজার নাম বাদ দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি এবং যথাযথ আইনি সহায়তা ও ন্যায়বিচারের জন্য প্রধান উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
মিসেস মর্তুজা বলেন, সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূলক মামলায় গোলাম মর্তুজাকে আওয়ামী লীগনেতা সাজিয়ে গত ৩ মার্চ সোমবার দিনগত রাত আনুমানিক ১টা ২০ মিনিটে র্যাব ১-এর একটি দল আটক করে।
নাদিরা মর্তুজা লিখিত আরও বলেন, এস এম গোলাম মর্তুজা সরকার কখনো আওয়ামী লীগ বা এর কোনো অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠনের সঙ্গে জড়িত নন। বরং তার পরিবার ঐতিহ্যগতভাবে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তাঁর বাবা কাবিল সরকার দীর্ঘ প্রায় তিন যুগ ধরে পল্লবীর মুসলিম বাজার ব্যবসায়ী সমিতির বিএনপি সমর্থিত সভাপতি ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে নাদিরা মর্তুজা ০৭/০৯/২০১৪ তারিখে বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে বেগম খলেদা জিয়া স্বাক্ষরিত একটি সদস্যভুক্তি রশিদ নবায়ন করেন। ০৪/০৯/২০২১ তারিখে বিএনপির সাধারণ সমর্থক হিসেবে কেন্দ্রীয় বিএনপিনেতা আমানউল্লাহ আমান ও মহানগর উত্তর বিএনপিনেতা আমিনুল হক স্বাক্ষরিত ‘তথ্য সংগ্রহ ফরম’ দেখান।
জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে এস এম গোলাম মর্তুজার অংশগ্রহণের বেশ কিছু স্থিরচিত্র ও ভিডিও চিত্র দেখিয়ে প্রিন্সিপাল নাদিরা মর্তুজা বলেন, তিনি ২৪-এর গণআন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতার পক্ষে সমর্থন দিয়ে আন্দোলনকে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের একাধিকবার রান্না করা খাবার ও পানি সরবরাহ করেছেন। দেওয়ালে গ্রাফিতি অঙ্কনের সময় রং ও তুলি সরবরাহ করে উৎসাহিত করেছেন। অথচ তাঁকে এখন ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের পল্লবী থানার আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য বানিয়ে মামলার আসামি করে হেনস্তা করা হচ্ছে।
তার স্বামী একজন ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক উল্লেখ করে প্রিন্সিপাল নাদিরা মর্তুজা বলেন, নিজ উদ্যোগে তিনি এলাকায় স্কুল-মসজিদ, মাদ্রাসা, খেলার মাঠ নির্মাণ করেছেন। তাঁর কোনো রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ নেই।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ক্যান্টনমেন্ট থানা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক হাজি মো. মজনু মিয়া, বিএনপিনেতা মো. শাহ আলম এবং ব্যবসায়ী আকবর দেওয়ানও সাংবাদিকদের জানান, আওয়ামী লীগের সঙ্গে গোলাম মর্তুজার কোনো সম্পর্ক নেই এবং তিনি বিএনপির একজন সমর্থক।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ মামলার পেছনে জমি সংক্রান্ত কোনো বিরোধ থাকতে পারে বলে সন্দেহ করেন মিসেস মর্তুজা। তিনি জানান গোলাম মর্তুজাকে গ্রেপ্তারের পর কে বা কারা রাতের আঁধারে তাদের দুটি জমি দখলে নিয়েছে।
এ সময় গোলাম মর্তুজাকে হয়রানি করার জন্য মঙ্গলবার একই ধরনের আরেকটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় বলে অভিযোগ করেন নাদিরা মর্তুজা।