ট্রাম্প-স্টারমার বৈঠকের পাঁচটি মূল দিক

তিন দিনের যুক্তরাজ্য সফরে স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) যৌথ সংবাদ সম্মেলনে হাজির হন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। সফরের শুরুতে কিছু টানাপোড়েন থাকলেও দুই নেতা এক কণ্ঠে ঘোষণা করেন, দুই দেশের সম্পর্ক “অটুট ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত”।
স্টারমার যুক্তরাষ্ট্রকে বর্ণনা করেন যুক্তরাজ্যের “প্রথম অংশীদার” হিসেবে। তিনি জানান, বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা ও প্রযুক্তি খাতে ওয়াশিংটনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করা হবে। অন্যদিকে ট্রাম্পও ব্রিটিশ আতিথেয়তার প্রশংসা করে বলেন, লন্ডন-ওয়াশিংটন সম্পর্ক আগের মতোই দৃঢ়।
তবে বিভিন্ন বিষয়ে দুই নেতার অবস্থান ভিন্নভাবে ধরা পড়েছে। খবর আল জাজিরার।
পুতিনকে নিয়ে হতাশ ট্রাম্প
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নে ট্রাম্প বলেন, ভেবেছিলাম প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এ সংঘাত সমাধানে কাজে আসবে। কিন্তু বাস্তবে আমি “হতাশ” হয়েছি।
স্টারমার জানান, যুক্তরাজ্য ইতোমধ্যেই ইউক্রেনকে সহায়তায় একাধিক উদ্যোগ নিয়েছে এবং পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে মিলে একটি “স্বেচ্ছাসেবী জোটের” নেতৃত্ব দিচ্ছে।
গাজা ইস্যুতে মতপার্থক্য
ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের প্রশ্নে ট্রাম্প আবারও হামাসের ৭ অক্টোবরের আক্রমণের কথা টেনে এনে একে “মানব ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ দিন” হিসেবে উল্লেখ করেন। তবে গাজায় ইসরায়েলের বোমা হামলা, গণহত্যা ও মানবিক বিপর্যয় নিয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
স্টারমার ফিলিস্তিন রাষ্ট্র স্বীকৃতির প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করলে ট্রাম্প জানান, এটিই তাদের অন্যতম বড় মতভেদ। তবুও ট্রাম্প বলেন, “আমরা কাজ করছি, জটিল হলেও শেষমেশ সমাধান হবে।”
ন্যাটো নিয়ে ভিন্ন সুর
ন্যাটো নিয়ে অতীতে সংশয় প্রকাশ করলেও এবার ট্রাম্প জোটের প্রশংসা করেন। তিনি ন্যাটো মহাসচিব মার্ক রুটের নাম নিয়ে বলেন, “তিনি অসাধারণ কাজ করেছেন।”
ট্রাম্প দাবি করেন, সদস্য দেশগুলো প্রতিরক্ষা বাজেট জিডিপির ৫ শতাংশে উন্নীত করার উদ্যোগ নিয়েছে, যা জোটকে আরও শক্তিশালী করবে।

আফগানিস্তানে ফেরার ইঙ্গিত
ট্রাম্প আবারও ২০২১ সালের মার্কিন সেনা প্রত্যাহারকে “বিধ্বংসী ও বিশৃঙ্খল” আখ্যা দেন। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানের বাগরাম বিমানঘাঁটি পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করছে।
তার ভাষায়, “আমরা ঘাঁটিটি ফেরত চাই, কারণ এটি কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ। চীন যেখানে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করে, সেখান থেকে মাত্র এক ঘণ্টার দূরত্বে এটি অবস্থিত।”
জিমি কিমেলকে নিয়ে ট্রাম্পের সমালোচনা
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে ট্রাম্প কথা বলেন মার্কিন টিভি উপস্থাপক জিমি কিমেলের চাকরিচ্যুতি প্রসঙ্গে। কিমেল ডানপন্থী প্রভাবশালী চার্লি কার্ককে নিয়ে সমালোচনামূলক মন্তব্য করার পর তার চাকরি যায়।
ট্রাম্প দাবি করেন, কিমেলকে “খারাপ রেটিং ও প্রতিভাহীনতার কারণে” বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি সরাসরি বলেন, “জিমি কিমেল প্রতিভাবান ব্যক্তি নন। অনেক আগেই তাকে বরখাস্ত করা উচিত ছিল।”