ঈদের কেনাকাটায় মেয়েদের পছন্দ পাকিস্তানি থ্রি-পিস, ছেলেদের পাঞ্জাবি

পবিত্র মাহে রমজানের ২০তম দিন আজ, ঈদের বাকি আর ৯-১০ দিন। শেষ মুহূর্তে রাজধানীর শপিংমলগুলোতে জমে উঠেছে ঈদের বেচাকেনা। এবার ঈদের কেনাকাটায় মেয়েদের পছন্দের শীর্ষে পাকিস্তানি থ্রি-পিস আর ছেলেদের ভিড় পাঞ্জাবির দোকানগুলোতে।
আজ শুক্রবার (২১ মার্চ) রাজধানীর বসুন্ধরা সিটি ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতাদের পদচারণায় মুখরিত এই মার্কেট। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে ভিড়ও।
দেশি-বিদেশি ব্রান্ডের পোশাক, জুতা, গহনা থেকে শুরু করে হাজার রকমের পণ্যের সমাহার এখানে। ছুটির দিনে তাই অনেকেই এসেছেন এখানে। নগরীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পরিবারসহ ছুটে এসেছেন ক্রেতারা।
বসুন্ধরা শপিং মলের নিচতলা থেকে শুরু করে চতুর্থ তলা পর্যন্ত সব ধরনের জামা-কাপড়, কসমেটিকস ও পারফিউমের দোকান। দেশি-বিদেশি ব্র্যান্ডের জুতার দোকানগুলো পঞ্চম তলায়। ষষ্ঠ তলায় স্বর্ণ ও অলংকারের দোকান রয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, নিচ তলা থেকে চতুর্থ তলা পর্যন্ত সবগুলো ব্র্যান্ডের দোকানে উপচেপড়া ভিড়। তবে মার্কেটের কোনো কোনো শাড়ির দোকানে এর উল্টো চিত্র। এসব দোকানে ক্রেতার উপস্থিতি কম।
একটি স্বনামধন্য ব্রান্ডের একজন সেলসম্যানের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, তাদের শো-রুমে জিন্স, শার্ট ও টি-র্শাটের কাস্টমার বেশি এসে থাকেন। কাস্টমারদের পছন্দের নতুন নতুন আইটেমে সাজানো হয়েছে সবগুলো আউটলেটই। বিভিন্ন দামের ও মানের প্রোডাক্ট রয়েছে।
ঈদে ছেলেদের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ পাঞ্জাবি। ব্র্যান্ডের পাঞ্জাবির দাম কিছুটা বেশি হলেও তরুণদের আগ্রহের কমতি নেই। পল্টন থেকে আসা তৌহিদুর রহমান নামের একজন ক্রেতার সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, আজ বসুন্ধরায় এসেছি মূলত পাঞ্জাবি কিনতে। নেটে ব্রান্ডের কালেকশন দেখলাম অনেক। ভালোই লেগেছে। যদিও পাঞ্জাবির দাম বেশি, তবে প্রিমিয়াম। তাই কেনার ইচ্ছে আছে।
পাকিস্তানি ও ইন্ডিয়ান ড্রেসের দোকানগুলোতে মোটামুটি ভিড় দেখা গেছে। মোহাম্মদপুর থেকে আসা নওশিন তাবাসুম নামের একজন নারী বলেন, ‘আমি পাকিস্তানি থ্রি-পিস কিনেছি। দাম একটু বেশি তবে পছন্দ হওয়ায় কিনে নিয়েছি।’ তার বোন তানজিলা তাবাসুমেরও পছন্দের ড্রেস থ্রি-পিস। তাই দুই বোন ম্যাচিং করে কিনেছেন নিজেদের পছন্দমতো।

পাঞ্জাবি-শার্ট, লেহেঙ্গা বা থ্রি-পিসের দোকানগুলোতে ভিড় দেখা গেলেও উল্টো চিত্র দেখা যায় শাড়ির দোকানগুলোতে। এসব দোকানে ক্রেতার উপস্থিতি অনেক কম। জ্যোতি শো-রুমের ম্যানেজার সুমন তালুকদার বলেন, দোকানের ভেতরের চিত্র দেখুন, একবারেই ক্রেতা নেই। এবার আমরা সেভাবে কাস্টমার পাচ্ছি না। রোজার শুরুর দিকেও সেভাবে বিক্রি হয়নি। ভেবেছিলাম শেষ দিকে হয়তো ভালো বিক্রি হবে। কিন্তু শুক্রবারে এসেও দেখুন কাস্টমার শূন্য।
আধুনিকা শাড়ির স্বত্বাধিকারী শ্রীকান্ত দাস বলেন, ভারতের ভিসা বন্ধ থাকায় ভেবেছি এবার আমাদের ব্যবসা ভালো যাবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেই রকম আলামত চোখে পড়েনি। দুই-একজন করে কাস্টমার আসলেও বেচাকেনা তুলনামূলক কম। আমরা নতুন নতুন কালেকশন এনেছিলাম কিন্তু মনে হচ্ছে ক্রেতাদের শাড়ির প্রতি এবার আগ্রহ কম। সবাই ছুটছে থ্রি-পিসের দিকে।
এদিকে ভিড় বেড়েছে বোরকার দোকানগুলোতেও। ইরানি বোরকার চাহিদা সবচেয়ে বেশি। পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের বোরকা মিলছে বসুন্ধরার বিভিন্ন শো-রুমে। এছাড়া পারফিউম ও আতরের শো-রুমেও ক্রেতাদের ভিড় দেখা মিলছে।