আশুলিয়ায় ছয় মরদেহ পোড়ানোর মামলার তদন্ত শেষ : চিফ প্রসিকিউটর

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেছেন, জুলাই-গণঅভ্যুত্থানে ঢাকার আশুলিয়ায় হত্যার পর ছয় মরদেহ পোড়ানোর ঘটনায় মামলার তদন্ত কাজ শেষ হয়েছে।
আজ রোববার (২৩ মার্চ) দুপুরে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন চিফ প্রসিকিউটর।
তাজুল ইসলাম বলেন, জুলাই-আগস্টের গণহত্যা মামলায় আশুলিয়ায় হত্যার পর ছয় মরদেহ পোড়ানোর ঘটনার মামলার তদন্ত কাজ শেষ হয়েছে। এটিই প্রথম কোনো মামলার তদন্ত সম্পন্ন হলো। যাচাই-বাছাই ও পর্যালোচনা শেষে আনুষ্ঠানিকভাবে অভিযোগ দাখিল করা হবে। ঈদের পরপর আরও তিন থেকে চারটি মামলার তদন্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার প্রত্যাশার কথা জানান তিনি। এর মধ্যে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে একটি মামলার তদন্ত রিপোর্টও থাকবে।
দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করা সম্ভব কি না এমন প্রশ্নে চিফ প্রসিকিউটর জানান, সেটির জন্য রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের প্রয়োজন। তবে, আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে জুলাই হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার যথেষ্ট প্রমাণ ট্রাইব্যুনালের হাতে আছে।
স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার পতন আন্দোলনে সাভার ও আশুলিয়ায় ১৮ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে মারা যান অন্তত ৭৫ জন। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে মরদেহ পোড়ানোর একটি ভিডিও। এক মিনিট ১৪ সেকেন্ডের মর্মান্তিক, হৃদয়বিদারক ও লোমহর্ষক ভিডিওতে দেখা যায়—একটি ভ্যানে কয়েকটি মরদেহ। এরপর দুজন পুলিশ সদস্যের একজন একটি মরদেহের হাত ও একজন সেটির পা ধরে ভ্যানে নিক্ষেপ করছেন। সবশেষ মরদেহটি তুলে একটি ব্যানার দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়।
ভিডিওর এক মিনিট ছয় সেকেন্ডে একটি পোস্টার দেখা যায়, যা স্থানীয় ধামসোনা ইউনিয়ন সভাপতি প্রার্থী ও ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী আবুল হোসেনের। সেই পোস্টারটি দেখে নিশ্চিত হওয়া যায়, ভিডিওটির ঘটনাস্থল আশুলিয়া থানার আশপাশে। পুলিশ মরদেহগুলো তাদের থানার সামনে নিয়ে যায়। সেখানে একটি পুলিশ ভ্যানে মরদেহগুলো রেখে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় গত ১১ সেপ্টেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দুটি অভিযোগ করা হয়। দুটি অভিযোগই অভিন্ন হওয়ায় একটি মামলা হয়। এ মামলায় গত ২৪ ডিসেম্বর স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য সাইফুল ইসলামসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
এ মামলায় সাইফুল ইসলাম পলাতক থাকলেও ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আব্দুল্লাহিল কাফি, ঢাকা জেলা পুলিশের সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুল ইসলাম, তৎকালীন ওসি এ এফ এম সায়েদ, ডিবি পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন, এসআই মালেক এবং কনস্টেবল মুকুলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।